ট্রেনে আগুন কূটচাল: বিএনপি
হরতালের ভোরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী কাজ আখ্যা দিয়ে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। এ ঘটনার পেছনে মহল বিশেষের প্রশ্রয় রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাদের আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এটি একটি ‘কূটচাল’ বলে মনে করছেন তারা।
জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে মঙ্গলবার বিএনপির ডাকা হরতালের সকালে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে এসে ঢাকায় ঢোকার পথে অগ্নি সন্ত্রাসের শিকার হয় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। তেজগাঁও স্টেশনে এসে থামা ট্রেনটির তিনটি বগি ভস্মিভূত হয়েছে। একটি বগি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক মা, তার শিশু সন্তানসহ চারজনের লাশ। এর কয়েক ঘণ্টা পর বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ ভোররাতে যারা তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন দিয়ে চারজন যাত্রীর প্রাণপ্রদীপ নিভিয়ে দিল, তারা নিঃসন্দেহে মানুষ নামের কলঙ্ক। মহল বিশেষের প্রশ্রয় ব্যতিরেকে এ ধরনের মানবতাবিরোধী কাজ করা সম্ভব নয়। মূলত, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এটি কূটচাল কিনা, তা নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে। এটি সুপরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা।’
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের দিনে সংঘর্ষের পর থেকে অবরোধ-হরতালের মত কর্মসূচি পালন করে আসছে দলটি। দফায় দফায় অবরোধের মধ্যে সড়কপথের যানবাহনে আগুনের পাশাপাশি রেললাইন তুলে বা কেটে ফেলা এবং ট্রেনে আগুন দেওয়ার মত নাশকতা ঘটছে। সেসব ঘটনার জন্য বিএনপি ও তাদের মিত্র জামায়াতকেই দায়ী করে আসছে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এই নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের মানবসভ্যতার শত্রু হিসেবে বর্ণনা করে বিবৃতিতে রিজভী বলেন, এরা মানবজাতিকেই অস্তিত্বহীন করতে চায়। এ ধরনের লোমহর্ষক ও পৈশাচিক কাজ কেবলমাত্র অবৈধ ও গণবিরোধী শক্তির মদদেই হওয়া সম্ভব। আমি এই বর্বরোচিত ও হৃদয়বিদারক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি, ধিক্কার জানাচ্ছি, তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেলপথে লাইন কেটে ফেলায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন।