ট্রেনে নাশকতা: ৫১ দিনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি কোচ, নিহত পাঁচ
![](https://sonalibarta.com/wp-content/uploads/2023/12/রেল-ট্রেন.webp)
সরকার হটানোর দাবি নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করে অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। তাদের সঙ্গে একই কর্মসূচি পালন করে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশসহ সরকারবিরোধী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। সেই সমাবেশ থেকেই নানা নাশকতা-সহিংসতার শুরু। এবার নাশকতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ট্রেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ৫১ দিনে মোট পাঁচটি ঘটনায় ৭টি কোচ পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে সাতটি কোচ। নিহত হয়েছেন পাঁচ জন, আহত অর্ধশতাধিক। রেলের নিরাপত্তায় সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন রেলপথমন্ত্রী। রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘রেল লাইন উপড়ে ফেলা, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, কোনো গণতান্ত্রিক দেশের রাজনীতি হতে পারে না।’
মন্ত্রণালয় বলছে, রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা সারাদেশে ঘটেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ট্রেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ৫১ দিনে মোট পাঁচটি সহিসংসতার ঘটনা ঘটেছে ট্রেনে। যার শুরু হয় গত ১৬ নভেম্বর। টাঙ্গাইলে কমিউটার ট্রেনে দাঁড়ানো অবস্থায় আগুন দেওয়া হয়। ওই ট্রেনের দু’টি কোচ পুড়ে যায়। একটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয় সহিংসতার ঘটনা ঘটে ১৯ নভেম্বর। জামালপুরের সরিষাবাড়িতে দাঁড়ানো অবস্থায় থাকা ৭৪৫ নম্বর ট্রেন ‘যমুনা এক্সপ্রেসে’ আগুন দেওয়া হয়। সে ঘটনায় দু’টি কোচ পুড়ে যায়। এরপর ২২ নভেম্বর সিলেটে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন উপবন এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। সে ঘটনায় আরেকটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ২০ ফুট রেল ট্রাক কেটে ফেলা হয়। এতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ট্রেনের সাতটি বগি ছিটকে যায়। তাতে একজন নিহত হোন এবং এলএম এএলএমসহ কয়েকজন আহত হোন। ওই দুর্ঘটনায় একটি লোকোমোটিভ ও ছয়টি কোচ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ট্রেনটি ধীরগতিতে চলছিল বলে তুলনামূলক ক্ষতি কম হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
সর্বশেষ ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার তেজগাঁও রেলস্টেশনে। চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছে। তিনটি কোচ একেবারের পুড়ে যায়।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে দুস্কৃতকারীরা গান পাউডার নিয়ে যাত্রী বেশে ট্রেনে উঠেছিল। সুযোগ বুঝে আগুন লাগিয়ে দেয়। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে ট্রেনে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ট্রেনকে নিরাপদ করতে প্রত্যেকের সহযোগিতা চাই। রেলে সহিংসতা ফৌজদারি অপরাধ উল্লেখ করে বলেন, ‘ফিসপ্লেট তুলে ফেলার ঘটনায় পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে। রেল নিরাপদ রাখতে আমরা লাইন চেক করা বাড়িয়েছি।
ট্রেনের নিরাপত্তা বাড়াতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২৭০০ রেল পুলিশ চেয়েছি। সেটা প্রক্রিয়াধীন।’