বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ অপরাহ্ন

ইশতেহার ঘোষণার আগে তরুণদের কথা শুনলেন শেখ হাসিনা

সিনিয়র রিপোর্টার / ১২১ Time View
Update : সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতায় এলে কী কী করা হবে তার বিবরণী জানাতে ইশতেহার নিয়ে আসছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আগামী ২৭ ডিসেম্বর এ ইশতেহার ঘোষণার সূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন ইশতেহারে আগের বছরগুলোর মতো এবারও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তরুণদের। এর আগে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে তরুণদের ভাবনা ও তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলো জানতে সরাসরি বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মনোভাব জানলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআই (সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) আয়োজিত লেটস টক অনুষ্ঠানে গত শুক্রবার এসব তরুণের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সোমবার ২৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণ সংগঠক এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এমন তরুণদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ শুনেছেন তিনি।

এসব তরুণদের মধ্যে কেউ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, কেউ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর, কেউবা এসেছেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে; ছিলেন চেইঞ্জমেকার, এমনকি সোশাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সারও। বিভিন্ন নীতি-নির্ধারণী বিষয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত প্রশ্নে তরুণদের মুখোমুখি হন তারা।

ঢাকায় ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ শিরোনামে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআই। এর আগে ২০১৮ সালে লেটস টক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মত তরুণদের মুখোমুখি হয়ে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয়বারের মত সরকার প্রধানের অংশ নেওয়া অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার। অনুষ্ঠানের সূচি পরে সিআরআই ও ইয়াং বাংলার অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে জানানো হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগেও তরুণদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। সরাসরি তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। এবারও তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি তিনি জেনেছেন, বর্তমান প্রজন্মের এসব প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী হলে দেশ গঠনে কী ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

অনুষ্ঠানে বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়। লেটস টক অনুষ্ঠান শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনায় তরুণরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই আলোচনার পর তারাও নিজেদের দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের অংশ বলে নিজেদের মনে করছেন।

তারা বিশ্বাস করেন, সামনে ইশতেহার ঘোষণায় তাদের দেওয়া পরামর্শগুলো বেশ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে দেশ গঠনে কাজ করে যাওয়া ও নিজ অবস্থান থেকে দেশের জন্য সুনাম নিয়ে আসা প্রায় ৩০০ জন তরুণ অংশ নেন।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, পররাষ্ট্র নীতি, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু থেকে শুরু করে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন এবং সেখানে তরুণদের ভূমিকা কী হবে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

নারীর নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নে তাদের চাকরির পরিবেশ তৈরিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জগুলো এবং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের পরিকল্পনা ও আমাদের করণীয় নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তরুণদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার, নারীর অধিকার, প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেই সঙ্গে এই গোষ্ঠীগুলোর উন্নয়নে সামনে সরকার আরও কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে এসব বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়।

তরুণদের সঙ্গে আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মধ্য থেকে অনেকের মধ্যেই আমি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হবার যোগ্যতা দেখতে পাচ্ছি। আশা করি এখান থেকেই কেউ একজন হবেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ হুইল চেয়ার স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা নূর নাহিয়ান সারা দেশে প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলা নিয়ে কাজ করেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি পছন্দ করেন ক্রিকেট খেলতে। হুইল চেয়ারে বসে দুর্দান্ত সব শট খেলা এ ব্যাটসম্যান ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরাসরি কথা বলার অভিজ্ঞতা অসাধারণ বলে বর্ণনা করেন নাহিয়ান। সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু সারা দেশের প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলা নিয়ে আমার কাজ, তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার জিজ্ঞাসা ছিলো প্রতিবন্ধীদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার জন্য অবকাঠামো সুবিধা প্রদানের বিষয়ে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাকে প্রতিবন্ধী উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যাবলী তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিটি অবকাঠামোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখার জন্য যেই পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন, সে বিষয়ে অবগত করেন।

নাহিয়ান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানালেন উনারা এখনই কাজ শুরু করে দিয়েছেন আমাদের জন্য। আর আগামীতেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন সবখানে স্বাধীনভাবে একা একা যাতায়াত করতে পারে। যেহেতু প্রতিবন্ধীরাও এই সমাজে একই গণ্ডির মধ্যে থাকে, তাই সমাজে তাদের মধ্যে কোন বিভেদ যেন না হয় এ সকল বিষয় তারা নিশ্চিত করছেন। তিনি জানিয়েছেন এই ধারাবাহিকতায় বজায় রাখবেন আগামীতেও। প্রতিবন্ধীরা যেনে আগামীর বাংলাদেশে সানন্দে সবখানে অংশগ্রহণ করতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর