প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে রংপুরে নেতাকর্মীদের ঢল
রংপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সড়কে নেমেছে মানুষের ঢল। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ সমর্থকরা উজ্জীবিত। জেলার তারাগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর সভা হলেও গোটা রংপুরজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। জনসভা উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে তিন উপজেলাতেই নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন।
তারাগঞ্জে বেলা সাড়ে ১১টায় তারাগঞ্জ ওয়াকফস্টেট সরকারি কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ নেবেন তিনি।
এদিকে সকাল আটটা থেকেই সভাস্থলের আশপাশে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। ছোট বড় মিছিল নিয়ে আসছেন তারা। তাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে সভাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা। নৌকা সাদৃশ্য ভ্যান ও হাতে হাতে ছোট কাঠের নৌকা নিয়ে নেতাকর্মীরা এসেছেন সভাস্থলে।
মিছিলে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের কর্মী রেজাউল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা আসছেন আমাদের মাঝে। আমরা খুবই আনন্দিত উৎফুল্ল। শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই নয় সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ কাজ করছে। আফরোজা সরকার নামে আরেক নারী কর্মী জানান, ভোরে পরিবারের জন্য রান্না শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সভায় এসেছি। কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে যেন দেখতে পারি সেজন্য সকাল সকাল অপেক্ষা করছি।
সকালে বিশাল একটি মিছিল নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করেন রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। এ সময় তিনি বলেন, সভা শুরুর আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে। আমরা গর্বিত। আমাদের এই আসনের ভোটাররাও গর্বিত। কেননা প্রধানমন্ত্রী এলে উন্নয়ন আরও সহজ হয়ে যায়। তিনি প্রত্যাশিত উন্নয়ন করেছেন। আমরা ওনার প্রতি কৃতজ্ঞ।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জে একই মাঠে জনসভা করেছেন। তারও আগে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পীরগঞ্জের তরফমৌজা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পথসভা ও লালদীঘির ফতেহপুরের জয়সদনে কর্মীসভা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ এ বছরের ২ আগস্ট রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখেন।
এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে রংপুর-২ আসনে আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর-৪ আসনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রংপুর-৫ আসনে রাশেক রহমান ও রংপুর-৬ আসনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতার কারণে রংপুর-১ আসনে দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু ও রংপুর-৩ আসন থেকে তুষার কান্তি মণ্ডলকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, রংপুর জেলার ছয়টি আসনে দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে রংপুর-১ আসনে নয়জন, রংপুর-২ আসনে তিনজন, রংপুর-৩ আসনে ছয়জন, রংপুর-৪ আসনে তিনজন, রংপুর-৫ আসনে আটজন এবং রংপুর-৬ আসনে সাতজন প্রার্থী। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি (রোববার) অনুষ্ঠিত হবে।