আসুন নিজে ভোট দিই, অন্যকে ভোটদানে উৎসাহিত করি: রাষ্ট্রপতি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চার দিন আগে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে নিজের ভোট দিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বুধবার বেলা ১১টার দিকে পাবনা সদর আসনের ভোটার রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এবং তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বঙ্গভবনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে নিজেদের ভোট দেন। ভোট দেওয়ার পর খামে ভরা ব্যালট পেপার নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান রাষ্ট্রপতি।
বঙ্গভবনের ক্রেডিনশিয়াল হলে ডাক যোগে ভোট দিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, আসুন নিজে ভোট দিই এবং অন্যকে ভোট দানে উৎসাহিত করি। ভোট মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। একজন নাগরিক হিসেবে ভোট দেয়া আমাদের দায়িত্ব। ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদান করেন। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটই হচ্ছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।
পাবনায় না গিয়ে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘আমি যদি বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে ওখানে যাই, তাহলে ভোটের দিন আমার ভোটকেন্দ্রটিসহ পুরো পাবনা জেলাতেই একটা প্রভাব পড়বে আমার নিরাপত্তার কারণে। সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে হয়তো বা একটু বিড়ম্বিত হবে, একটু বাধার সম্মুখিন হবে। হয়তো কিছুক্ষণের জন্য। আমার সচেতন বুদ্ধি বলে, এই ক্ষেত্রে আমার এলাকায় গিয়ে ভোট দেওয়া, সাধারণ ভোটারদের বিঘ্নিত করা আমার উচিৎ হবে না।’
রাষ্ট্রপতি আশা করেন, সবার অংশগ্রহণে এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপ্রধান পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে সক্ষম হন। নিবন্ধিত ভোটার, যারা কারাবন্দি বা আইনি হেফাজতে আছেন, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
ভোটকেন্দ্রে যেতে অসমর্থ-এমন চার ধরনের ভোটাররা ডাকে (পোস্টাল ব্যালটে) ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এ বিধান চালু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে এবারের সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে উৎসাহিত করতে প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ে সভার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে উৎসাহিত করতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে প্রচারণার নির্দেশনা দেয়া হয়।
ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যিনি ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আগ্রহী, তাকে একটি পোস্টাল ব্যালট পেপারের জন্য তার নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করতে হবে। এতে বলা হয়েছে, আবেদনটিতে অবশ্যই ভোটারের নাম, ডাক ঠিকানা এবং ভোটার তালিকায় ক্রমিক নম্বর থাকতে হবে।
রাষ্ট্রপতির ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালটের বিষয়টি জনপ্রিয় করতে চায় নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও তার সহধর্মিণী পাবনা সদরের ভোটার। রিটার্নিং অফিসার সময়সীমার মধ্যে তাদের প্রাপ্ত পোস্টাল ভোটগুলো বিবেচনা করবেন এবং সেই ভোটগুলো গণনা করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবেন।