শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ অপরাহ্ন

ভোগান্তি কমাতে নতুন বিমানীতি প্রণয়ন হচ্ছে

অর্থনীতি প্রতিবেদক / ১৭৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৪
ছবি : সংগৃহীত

বিমা খাতে গ্রাহক ভোগান্তি দূর করতে নতুন করে বিমানীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের নীতি নির্ধারণীরা বলছেন, দেশে প্রাতিষ্ঠানিক বিমার প্রসার ঘটলেও সার্বিকভাবে আস্থার সংকটের কারণে বিমা সেবার বিস্তার সেভাবে বাড়ছে না। বিশেষ করে বিমা খাতে গ্রাহক ভোগান্তি, প্রতারণা ও অনিয়মের সীমাহীন অভিযোগ রয়েছে। এগুলো অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়ায় নতুন বিমানীতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই বিমা খাতে সুশানের ঘাটতি, উচ্চ ব্যবস্থপনা ব্যয়, মূলধন অপর্যাপ্ততা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের অভাব রয়েছে। শুধু তাই নয়, জীবন বিমা কোম্পানিগুলোতে অ্যাকচুয়ারির অভাব রয়েছে। তাই এসব বিষয় বিবেচনায় এনে সার্বিকভাবে বিমা খাতের উন্নয়নে চলমান জাতীয় বিমানীতি যুগোপযোগী করে নতুন বিমানীতি ২০২৩ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, প্রণীতব্য ‘জাতীয় বিমানীতি’-তে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টির পাশাপাশি ইন্স্যুরেন্স গ্যারান্টি বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে ইন্স্যুরেন্স গ্যারান্টির বিষয়টিকে বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া হয়ে থাকে। পাশাপাশি ব্যাংক খাত থেকে যেসব বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয় সেগুলোর বিপরীতেও বিমা কভারেজ থাকা আবশ্যক। নতুন বিমানীতিতে এটিও অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিমা খাতের নিয়মতান্ত্রিক উন্নয়নে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় বিমানীতি ২০১৪’ প্রণয়ন করা হয়। এরপর ৯ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এ সময়ে নতুন অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে, নতুন অনেক সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলো থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে নতুন কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এজন্য নতুন বিমানীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বিমা খাতের প্রসারে বিমা ব্যবসাকে একটি আর্থসামাজিক সেবা-ব্যবসা হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে-সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বিস্তৃত করা। এক্ষেত্রে বিমাকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলমান নীতির ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের ফলে বিমা খাতের বেশ কয়েকটি প্রতিবন্ধকতা অত্যন্ত সফলতার সাথে দূর করা সম্ভব হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সময়ের প্রয়োজনে বিশেষত এসডিজি ২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী উন্নত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জাতীয় অর্থনীতিতে বিমার ভূমিকা আরও বাড়নোর লক্ষ্যে নতুন বিমানীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। বিশেষত স্বাস্থ্য বিমা ও ঝুঁকিনির্ভর বিমার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং চলমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন বিমানীতি প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি। তবে নতুন বিমানীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে দেশীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাত সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যতটা এগিয়েছে বিমার ক্ষেত্রে ততটা হয়নি। উন্নত দেশে বিমার পেনিট্রেশন হার অনেক বেশি। হংকংয়ে বিমার পেনিট্রেশন হার ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ, কানাডায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ ও ভারতে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। বাংলাদেশে পেনিট্রেশন হার ১ শতাংশেরও কম (মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ)। নতুন বিমানীতিতে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে পেনিট্রেশন হার ২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর