শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন

নির্বাচন বিরোধিতা ও সন্ত্রাস বিএনপির ডিএনএতেই আছে : আরাফাত

শেখ সাদী খান / ১৩৭ Time View
Update : শনিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৪

বিএনপি জামায়াত কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনা৷নির্বাচন বিরোধিতা বিএনপির ডিএনএ-তেই মিশে আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

আজ শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় রাজধানীর তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, নির্বাচন বিরোধিতা ও সন্ত্রাস বিএনপির ডিএনএতেই মিশে আছে। ভোট এলেই তারা সামপ্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গিদের সঙ্গে একাট্রা হয়ে নারী ভোটার, ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর ভোটারসহ দেশের নাগরিকদের টার্গেট করে এবং নাশকতার মাধ্যমে তারা মানুষকে ভয় দেখিয়ে তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করে। প্রমাণের কোন অভাব নেই। তারা এই কাজগুলি একটার পর একটা করছে, মানুষকে পুড়িয়ে মারছে।আমরা যদি এটা না বলি তারা এটা করেই যাবে এবং অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাবে। আমরা কেন বলছি দূবৃত্তরা এই কাজ করছে, কেন বলছি না এটা বিএনপি জামাতের দূবৃত্তরা করছে। যেটার সব কিছু প্রমাণসহ আছে।বিএনপির সন্ত্রাসীদের যখন পুলিশ এরেস্ট করে তখন যদি প্রশ্ন ওঠে কেন বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাহলে প্রশ্ন কেন ওঠছে না এই নাশকতা, অগ্নি সন্ত্রাস বিএনপি কখন থামাবে?;বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের পথে হাঁটছে ঠিক তখনই আগুন সন্ত্রাস ও খুনের রাজনীতির ঘৃণ্য চিত্র দেখতে পাচ্ছি৷ নির্বাচন এলেই বিএনপি জামায়াতের নির্বাচন বিমুখ চরিত্র কিভাবে যেন প্রকাশ হয়ে পড়ে। বিএনপি-জামায়াত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পক্রিয়ার বাইরে গিয়ে ২০১৩ ও ১৪ সালের মতো অগ্নি সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বিগত দিনে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের দ্বারা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে যত হামলা ও অগ্নিসংযোগ ঘটেছে সেটার একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, গতকাল ও আজকে এখন পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের দেশের ২০টির অধিক ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। রাজবাড়ির একটা স্কুলে পাহারায় থাকা একজন গ্রাম পুলিশকে হত্যা করেছে। রামুতে রাখাইন বৌদ্ধমন্দিরে আগুন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন। ডেমরা ও কুমিল্লাতে দুটি বাসে আগুন দিয়েছে। ভোলাতে একটা বেসরকারি হাসপাতালে হামলা ও ভাংচুর করেছে গত দুইদিনে।

গত ২৮ অক্টোবরের বিএনপি -জামায়াতের তান্ডবের কথা উল্লেখ করে আরাফাত বলেন, তাদের কাজই হল বাসে ট্রেনে আগুন দেয়া,রেললাইন উপড়ে ফেলা৷ এবং দেশের সম্পদ ধংস করা, বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা৷ ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপি জামাতের আগুনে যে ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বিভিন্ন মানুষ এবং রাষ্ট্রের সম্পদ ব্যক্তিগত সম্পদ ৬৫৮টির বেশি যাত্রীবাহি বাস আগুন লাগানো ও ভাঙচুর করা হয়েছে রেলে নাশকতার ঘটনা ঘটিয়েছে ২১ টি। সতেরোটি ট্রেনে আগুন দেয়া হয়েছে এতে ১০ জনের জীবন নাশ হয়েছে।
২০জন বাসচালক ও হেলপার অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। কমপক্ষে ৪০০ বোমা ও ককটেল হামলা করা হয়েছে। ১৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। অর্ধশতাধিক সাংবাদিক হামলা করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের ৬ টি কার্যালয়ে হামলা করা হয়েছে। খুলনায় আদালতের এজলাসখানা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন এসব ঘটনা ঘটাতে গিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হাতেনাতে ধরা পড়েছে৷ প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে হাতেনাতে তাদেরকে ধরা হচ্ছে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সে বিষয়ে রিপোর্ট হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর উত্তরায় ককটেল বিস্ফোরণের সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে গাজীপুরের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী মোহাম্মদ হাসান। ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে রেলে যে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয় সেই সময় বিএনপি জামাত সমর্থক জয়নাল আবেদিন ও মো: আরিফকে আটক করে রেলওয়ে পুলিশ। গাজীপুরের শ্রীপুরের বনখড়িয়ায় রেললাইন কেটে নাশকতার দায়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজমল হোসেন ভূইয়াসহ বিএনপি যুবদল ও ছাত্রদলের ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা অপরাধের দায়ও স্বীকার করে। মাগুরা থেকে গত বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের এক নেতাকে গ্রেফতারের পর বিএনপি জামাতের নাশকতার পরিকল্পনার কথা তারা জানাই। ব্রিফিংয়ে পুলিশের আইজিপি জানাই।

তিনি আরও বলেন, পরিতাপের বিষয় হল, যে নাশকতা বিএনপি জামায়াত করছে এবং মানুষকে হত্যা করছে কিন্তু তাদের সাথে তাদেরই পার্টনার ইন ক্রাইম একদল মানুষ যারা টুইটারে যেটাকে বলা হয় এক্স, ফেসবুকে এবং টেলিভিশন টকশো গুলোতে এবং অন লাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে অসত্যভাবে অপপ্রচার করে সবগুলো দোষ সরকারের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে। এবং মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করার চেষ্টা করে।

তারা (বিএনপি) কিভাবে অত্যান্ত সুকৌশলে গুজব ছড়াই সে বিষয় আলোকপাত করে আরাফাত বলেন কিছুদিন আগে ডিজি হেলথের বরাবর পুলিশের তরফ থেকে একটা চিঠি দেয়া হয় হসপিটালগুলি বিশেষভাবে সুরক্ষিত রাখার জন্য। বিএনপি যখনই কোন ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয় সেইদিন থেকে রাত্রেবেলা থেকে শুরু হয়ে যায় ঘটনা। পুলিশ তাদের সেকেন্ড লাইফ অন ডিফেন্স হিসেবে তারা মাথায় রাখে যে কি ধরনের ব্যবস্থা থাকা উচিৎ হাসপাতালগুলি যেখানে কোনভাবে ম্যানেজ করতে পারে না যেহেতু তারা চোরাগুপ্ত হামলা চালাই। সেখানে আহতদেরকে তাড়াতাড়ি যাতে চিকিৎসা দেয়া যায়৷ সেই চিঠিকে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এনে বলার চেষ্টা করেছে যে পুলিশ আগে থেকে কিভাবে জানলো। আমরা যখন বলেছি এটা গোটা বাংলাদেশের মানুষ জানে। এরপরও তাদের গুজব, হামলা থেমে নেই।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার গোপীবাগে যশোর থেকে আসা বেনাপোল এক্সপ্রেসে এই ট্রেনে নাশকতার যে আগুন জ্বলেছে তাতে মা ও তার শিশুসন্তানসহ চার চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে বিএনপি জামাতের এই নাশকতার আগুনে। আরও কয়েকজন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন৷ যাদের অনেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। নিহত স্বজনদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: রোকেয়া সুলতানা, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া,উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরায়জী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর