জনপ্রিয়তার নিরিখে শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়না : শিক্ষামন্ত্রী নওফেল
সব কিছুই পরিবর্তনযোগ্য। শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে শিক্ষাপদ্ধতি তৈরি করা হয়। শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার নিরিখে শিক্ষা পদ্ধতি বা কারিকুলামের পরিবর্তন হয়না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
গতকাল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে দেশের এক বেসরকারি টেলিভিশনে বিশেষ সাক্ষাৎকালে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এসব কথা বলেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন,ধন্যবাদ জানাতে চাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে তিনি আমাকে আবারও এই মন্ত্রনালয়ে রেখেছেন নতুনভাবে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর দেয়া দায়িত্ব সদ্য সমাপ্ত সরকারের আমলে সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। এবারের কাজটা হবে যে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট জেনারেশন তৈরি করতে স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেম সেটাকে বাস্তবায়ন করবো।এবং এটার অন্যতম একটা কারণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এই শিক্ষা পদ্ধতি বা পুরো শিক্ষা পরিবার এমনভাবে কাজ করবে যাতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা পরবর্তী প্রজন্মের সন্তানগণ তারা দক্ষ হয়ে উঠে জীবমুখী শিক্ষা পাই। এবং সে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তারা যেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কারিগরি শিক্ষায় কতটা গুরুত্ব দেয়া হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আগামী পাঁচ বছর কি লক্ষ্য ঠিক করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন,ভোকেশনাল অর্থাৎ বৃত্তি। বৃত্তির সাথে শিক্ষার সম্পর্ক সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা আমরা এন্ট্রিগ্রেড করছি এখন। সেটা আলাদাভাবে চিন্তা করার অবকাশ নেই৷ আমরা সাধারণ শিক্ষার মধ্যেই বৃত্তিমূলক শিক্ষার একটা সম্মিলন সেটা ঘটানোর চেষ্টা করছি। বৃত্তিমূলক শিক্ষার যে বিশেষায়িত অংশ ডিপ্লোমা যেটা সেটা আলাদা আছে তবে স্কুল পর্যায়ে স্কুল ভোকেশনাল,দাখিল ভোকেশনাল যেটা আছে সেটা চলমান থাকবে।সেটার ব্যাপ্তি ও বিস্তৃতি বাড়ানোর চেষ্টা হবে।
নির্বাচনের আগে শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে অনেক ক্যাম্পেইন হয়েছে, কারিকুলাম নিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত কিভাবে সেগুলোএক্সিকিশনে যাবেন সেই সমালোচনা, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কিভাবে করবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন,আলোচনা অবশ্যই হবে। আলোচনা-সমালোচনা সেটা নিয়েই আমাদের কাজ করতে হয়। তবে সেখানে যদি তেমন কোন বিষয় আমাদের সামনে উঠে আসে (মাত্র তো শুরু হল নতুন শিক্ষা বছর) তখন অবশ্যই আমরা সেখানে যথাযথ পরিবর্তন আনবো,সংশোধন আনবো। এটা এমন কিছু নয় যে আমরা পরিবর্তন করতে পারবো না৷ পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই একটা নির্দিষ্ট সময় পরে কারিকুলামের পরিবর্তন আসে,কন্টেন্টের পরিবর্তন আসে। টিচিং প্যাডাগোজিতে পরিবর্তন আসে,পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসে সুতরাং ঐ পরিবর্তন মেনে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। কিন্তু সেখানে পরিবর্তন করার মধ্যে যদি দুর্বলতা থাকে,প্রতিবন্ধকতা থাকে সেগুলো আমরা নিরসন করবো। কিন্তু সমস্যা কোথাও থাকলে সেটার নিরশনটাই কাজ হবে।শুধু সমস্যা নিরশনের কথা বলে সেটা আমরা একেবারে বন্ধ করে দিবো কোন একটা পরিবর্তন রুপান্তর করে সেটা তো নয়। তবে হ্যাঁ যদি সেখানে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে সেভাবে কাজ করে আমরা সংশোধন করে নিবো আমরা।
সমালোচনা আছে শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি এক্সপেরিমেন্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এমন প্রশ্ন উঠেছে এটা কতটা উপযোগী এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, একটা কারিকুলাম তো রাতারাতি আসেনি সেটার পিছনে অনেক কাজ হয়েছে, অনেক প্রক্রিয়া সমৃক্ত ছিল।সেটা এখানে জনপ্রিয়তা বা অজনপ্রিয়তার বিষয় এখানে আসতে পারেনা। আমরা দেখছি। পরীক্ষা নীরিক্ষার কথা এটা সমালোচনা হচ্ছে এখানে স্পষ্ট বলতে চাই পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কোন এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছেনা।
প্রতিবছর অনেক গ্রাজুয়েট বের হয় উচ্চ শিক্ষায় তাদের নিয়ে পরিকল্পনা ও পরামর্শ কি থাকবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন,গ্রাজুয়েটদের বিষয় সেগুলো খুব আর্লি ডেইজ এই বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবেনা। গ্রাজুয়েটদেরকেও সেটা ভাবতে হবে। আমি স্কিল এডিকেশনে বা ট্রেনিংয়ের না গিয়ে কেন জেনারেল এডুকেশনে শুধু নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছি। জেনারেল এডুকেশন আমাদের সামাজিক সাংস্কৃতিক পার্সপেক্টিভে জেনারেল এডুকেশনে যায়। কিন্তু পাশাপাশি ভোকেশনার এডুকেশন সেখানে স্কিল বেইজড সার্টিফিকেইশন নানা ধরনের ট্রেনিং এগুলো আমাকে অবশ্যই করতে হবে
মন্ত্রী আরও বলেন, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের। তারা যদি মনে করে আমি এমবি পাস করেছি এখন আমার একটা কর্মসংস্থান অপেক্ষা করছে তাহলে বলতে হবে বোকার স্বর্গে বাস করছে। কাজ সৃষ্টি যেগুলো হচ্ছে সেগুলো আমার যোগ্য কিনা। আমার যে দক্ষতা আমি অর্জন করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজে পড়ে সেই দক্ষতা না কাজগুলো প্রযোজ্য কিনা না হলে আমার সেটা ট্রেনিং করে নিতে হবে। না সেই সার্টিফিকেশন অর্জন করতে হবে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে মানসিকতার পরিবর্তন খুবই প্রয়োজন।