উপজেলা নির্বাচনেও প্রার্থীতা উন্মুক্ত থাকবে আ:লীগের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরই যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেখানে দলীয়ভাবে মনোনয়ন নাও দেওয়া হতে পারে এবার,সে কথা ভাবছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলটির অধিকাংশ নেতাদের ভাষ্য, তৃণমূলের রাজনীতিতে বিভাজন ঠেকাতে এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় দলীয় প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়ে তারা ভাবছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।এই ভোট হতে পারে আগামী মার্চে। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, এবার চার থেকে পাঁচ ধাপে উপজেলার ভোট হতে পারে।
২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো আইন সংশোধনের পর থেকে দলীয় প্রতীকে ভোটদানের বিধান চালু হয়েছে । এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিপাকেও পড়তে হয়েছে। অতীতে একজনকে প্রতীক দিলে আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন।তাতে দলীয় শৃঙ্খলা যেমন নষ্ট হয়েছে, তেমনই তৃণমূলে বিভেদ-বিভাজনও সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বিপাকে পড়তে হয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে। একেক নেতা একেক প্রার্থীকে সমর্থন করার ফলে অনেক স্থানে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত সংঘাতের সৃষ্টি হয়।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেবল চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ দুটি উন্মুক্ত রেখেছিল দলটি।
দলটির জ্যেষ্ঠ একজন নেতা জানিয়েছেন, “বিএনপি নির্বাচনে না এলে তখন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতারাই দাঁড়িয়ে যায়। যার ফলে তৃণমূল নেতারা অনেক ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে আওয়ামী লীগ স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতেও দলীয় প্রার্থীর বাইরে বিকল্প প্রার্থী রাখার নির্দেশনা এসেছিল আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে। এক্ষেত্রে বিকল্প প্রার্থীদের অতীতের মত বিদ্রোহী তকমা দেওয়া হয়নি; স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে কোনো ব্যবস্থা যে নেওয়া হবে না, সে কথাও শীর্ষ পর্যায় থেকে জানানো হয়। আর তাতে ২৯৯ আসনের মধ্যে ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেরিয়ে আসে। যাদের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জন করা বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও আসবে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।উল্লেখ বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধিনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।
আগামী উপজেলা নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমাদের দলের পক্ষে প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেটা আমাদের আলোচনা হলে জানতে পারবেন।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেবে কি না এমন প্রশ্নে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আলোচনা চলছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কিছু বলা যাবে না এই মুহূর্তে।