সপ্তম শ্রেণির শরীফার গল্পে বিতর্কিত দুই লাইন প্রত্যাহারের দাবি সংসদে
সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই ইতিহাস ও সমাজ বিজ্ঞানে শরীফা গল্পের বিতর্কিত’ দুটো লাইন প্রত্যাহারের দাবি করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন।
ট্রান্সজেন্ডার ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে মজিবুল হক বলেন, সপ্তম শ্রেণীর বইয়ের শরিফার গল্পে মাত্র দুইটা লাইন.. ছোটবেলায় সবাই আমাকে ছেলে বলতো, কিন্তু আমি নিজে একসময় বুঝলাম আমার শরীরটা ছেলের মতো হলেও মনে মনে একজন মেয়ে। এটা হল একটা মানসিক বিষয়। এটা যেহেতু ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তাই দুটো লাইন পরিবর্তন করা হলে এ দেশের মানুষের কোন আপত্তি থাকবে না।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ইদানিং একটা বিষয় পত্রপত্রিকা, সোশাল মিডিয়ায় সবখানে আলোচিত হচ্ছে-সে আলোচনায় দেখা যায় অনেক সময় ভুল আলোচনা হয়, মানুষের অনুভূতিতে আঘাত আসছে। তাতে ধুম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে। সেটা হেলো সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের একটি গল্প- শরীফার গল্প।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, শিক্ষামন্ত্রী যাতে বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক উল্টাপাল্টা কথা হচ্ছে। সামন্য জিনিস যাতে বড় না হয়, শিক্ষা মন্ত্রী অংশীজনের সঙ্গে বসে দুটো লাইন যদি প্রত্যাহার করা হয় তাহলে কোন বিতর্ক থাকে না।
গল্পটি পড়ে শুনিয়ে ট্রান্সজেন্ডার, তৃতীয় লিঙ্গ এবং হিজড়া-এরমধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নিজেকে নিজের জন্মগত লিঙ্গ বাদে অন্য কোনো লিঙ্গ মনে করাটাই ট্রান্সজেন্ডার। এ বিষয়টা পুরো পুরি মেন্টাল। হিজড়া যারা তারা হল থার্ড জেন্ডার, সে বিষয়টা জন্মগত। এটা মানসিক, শারিরীক উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এরাই থার্ড জেন্ডার অথবা তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত। ট্রান্সজেন্ডার একটি শ্রেণীর মতবাদ, এটা প্রবর্তিত হয়েছে গতানুগতি, সামাজিক ও ধর্মের ধারণা অর্থাৎ পরিবার, ধর্মকে ভেঙ্গে সামাজিক একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে।
এদের মতবাদ অনুযায়ী একজন ব্যক্তি যে কোনো সময় যে কোনো লিঙ্গ হসেবে পরিচয় দিতে পারবে। আল্লাহ আমাদের কি লিঙ্গ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন সেটা তাদের কাছে কোনো বিষয়ই না। তবে পশ্চিমাদের অনেকেই এ মতবাদের বিরোধী।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ট্রান্সজেন্ডার ধারনাটি থার্ড জেন্ডার হিসেবে চালিয়ে আমাদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্দেশ্য কোনোক্রমেই ভালো বলে আমরা মনে করছি না। এ ট্রান্সজেন্ডার ধারণাটি ইসলাম ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ ইতোমধ্যে মতামত দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দল তারা দলীয়ভাবে ট্রান্সজেন্ডার ধারণার বিরোধী।
তিনি বলেন, আমরা ইসলাম ধর্মের অনুসারী। তাই বিশ্বাস করি, যারা হিজড়া তারা নিজ থেকে হিজড়া না। তারা জন্মগতভাবে হিজড়া আল্লাহ পাক তাদের এভাবে সৃষ্টি করেছেন। এদের অধিকার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম স্বীকার করে। ইসলাম ধর্মেও এদের অধিকার সুরক্ষিত রয়েছে। এমনকি সৌ্যদি ফতোয়া বোর্ড এদেরকে অপারেশন করে স্পেসিফিক জেন্ডারে রূপান্তরিত করাকে সহি বলে অনেক আগে মতামত দিয়েছেন। হিজড়াদের নিয়ে কারো কোনো আপত্তি নেই।