শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন

ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাকে ‘বাংলার টেসলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেন: নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৭৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাকে ‘বাংলার টেসলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিদ্যুতচালিত যানবাহনকে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে রাষ্ট্রীয়ভাবে এটাকে উৎসাহিত করার কথা বলেছেন প্রতিমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রশ্নোত্তরে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নে এ কথা বলেন। সংসদ সদস্য তার প্রশ্নে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা বন্ধের দাবি জানালেও মন্ত্রী এগুলোকে আরো উৎসাহিত করার কথা  বলেন।

শামীম ওসমান তার সম্পুরক প্রশ্নে বলেন- ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চলছে। রিক্সার মধ্যেও ব্যটাররি লাগানো হচ্ছে। এগুলো খুবই বিপদজনক এবং চলাও নিষিদ্ধ। এই অটোরিক্সাগুলি চার্জ করে তার ৯০ শতাংশ বিদ্যুত চুরি করে। তারা আমাদের ৭/৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুত খরচ করছে। এগুলো একযোগে সারা দেশে বন্ধের কোন বিশেষ উদ্যোগ নেবেন কী না? তা জানতে চাই।

জবাবে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, কত দ্রুত ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমকে ইলেকট্রিকে নিয়ে যাওয়া যায়- তারজন্য সারা বিশ্বে এখন একটা রেভুলেশন চলছে। তেল চালিত গাড়ির ইঞ্জিনের দক্ষতার মাত্রা হলো ২০ শতাংশ। অপরদিকে ইলেকট্রিক যন্ত্রের দক্ষতার মাত্রা হলো ৮০ শতাংশ। মুলত আমরা উৎসাহিত করি বাজারে যত দ্রুত পারে ইলেকট্রিক গাড়ি আসুক।

তিনি জানান, তেলচালিত বাহনে কোন দুরত্ব যেতে যদি ১০০ টাকা লাগে, বিদ্যুতচালিত যানে সেই দুরত্ব যেতে লাগবে ২০ টাকা। বাংলাদেশে ৪০ লাখের ওপর যানবাহন আছে। যারা লেড ব্যাটারি ব্যবহার করে। এগুলো চার্জ করতে ৭/৮ ঘন্টা সময় লাগে। এগুলো যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয়, তাহলে লাগবে মাত্র আধা ঘন্টা।

প্রতিমন্ত্রী বলেণ, বিদ্যুত বিভাগ আমরা ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জির স্টেশন বসানোর নীতিমালা করেছি। এ নীতিমালা করে যে কেউ চাইলে চার্জ স্টেশন করতে পারবেন।

নসরুল হামিদ বলেন, এই ৪০ লাখ থ্রি হুইলারকে আমি বলি বাংলা ট্রেসলার। নিজ হাতে তৈরি করছেন। আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে কাজ করছেন। আমরা তাদের কোন বাধা দিচ্ছি না। যান্ত্রিকভাবে এতে ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্যুত যেটা ব্যবহার করছে। তার রিটার্ন কিন্তু অনেক বেশি। এই ৪০ লাখ রিক্সাচালক যারা বিদ্যুত ব্যবহার করছে। তারা অবশ্যই আয় করছেন। এক্ষেত্রে আমরা লেড ব্যাটারি থেকে যারা যেন লিথিয়াম ব্যাটারিতে চলে আছে। এটা নিয়ে আমরা একটা প্রকল্প করছি। আমরা লেড ব্যাটারি নিয়ে তাদের লিথিয়াম ব্যাটারি প্রদান করবো।

তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশে যত পাবলিক পরিবহন (বাস) আছে। সেগুলি দ্রুততার সাথে বিদ্যুতে নিয়ে আসা উচিত। খরচ কম। পরিবেশ বান্ধব। বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টর ১৮ শতাংশ কার্বন নি:সরণ করে। তবে অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগের। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত। কোথাও অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহার হয় কী না বিদ্যুত কোম্পানীগুলো সেগুলোর বিষয়ে নজরে রাখছে। বেশিরভাগই এখন অবৈধভাবে বিদ্যুত না নিয়ে মিটারের মাধ্যমে নিচ্ছে।

এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ক্যাপটিভ ও অফগ্রিড নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট। আর গ্রিডভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৬ হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ১১ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট (৪৩ শতাংশ), ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ছয় হাজার ৪৯২ মেগাওয়াট (২৪ শতাংশ), ডিজেলভিত্তিক ৮২৬ মেগাওয়াট (৩ শতাংশ), কয়লাভিত্তিক চার হাজার ৪৯১ মেগাওয়াট (১৭ শতাংশ), হাইড্রো ২৩০ মেগাওয়াট (এক শতাংশ), অনগ্রিড সৌর বিদ্যুৎ ৪৫৯ মেগাওয়াট (দুই শতাংশ), বিদ্যুৎ আমদানি দুই ২ হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট (১০ শতাংশ)।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাপ্যতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার বিপরীতে ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় এ বছর শীতকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াটে নেমে আসে। আসন্ন গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর