বিএনপির ভুলের খেসারত দীর্ঘদিন দিতে হবে-কাদের
যারা আন্দোলনটা করবে তাদের সাবজেক্টিভ প্রিপারেশন থাকতে হবে। সুসংগঠনগত প্রস্তুতি সেই আমাদের দেশের বিরোধী দল যে অর্জন করতে পারেনি। সেটা তাদের নির্বাচন পূর্ববর্তী ব্যর্থ আন্দোলন থেকে সেটা স্পষ্ট। এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ না নিয়ে বিএনপি যে ভুল করেছে,সে ভুলের খেসারত তাদের আরও অনেকদিন দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার(০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ধানমণ্ডি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে সব সূচকে এগিয়ে কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রে একই রকম দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলকে জেলে রেখে নির্বাচন হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের ব্যাপারটা বিশেষ করে পাকিস্তানের গণতন্ত্র আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র যোজন যোজন দূরের ব্যাপার। যেখানে দুনিয়ার কোন দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নাই কিন্তু পাকিস্তান তত্তাবধায়ক সরকার ধরে রেখেছে। সো কলড একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ধরে রেখেছে। এখন পার্থক্যটা হচ্ছে এই, আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব (আমেরিকার কথা উল্লেখ করে) বলেন বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে মাতামাতি করে, তারপরে এখানে ভীসানীতি নিয়ে আসে,নিষেধাজ্ঞা আসে এতটা কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষেত্রে মাতামাতি নেই। তো নির্বাচনটা প্রকাশ্যেই ভালো হবে। পাকিস্তানের নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে, ভোট কারচুপি, জালিয়াতির অভিযোগ অনেক গণমাধ্যমে আসতে শুরু করেছে। এরমধ্যে ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে ইলেকশনে। আগের দিন বেলুচে বোমা বিস্ফোরণে কয়েক ডজন লোকের মৃত্যু হয়েছে। কাজেই আমরা গণতন্ত্রের যে ট্রু কল অনুসরণ করি। আমাদের দেশে ইলেকশন হয়েছে। বিরোধী দল আসেনি কিন্তু আমরা নির্বাচনটা ফেয়ার করেছি। আমাদের নির্বাচনে চোখে পড়ার মতো তেমন কোন সংঘাত,সহিংসতা বাংলাদেশে হয়নি। স্বাধীনতার পর যতগুলো ভালো নির্বাচন হয়েছে তারমধ্য অন্যতম।
আমরা বারবার একটা কথা বলি,আমরা পারফেক্ট নই, কেউ পারফেক্ট নয়। যারা আজকে আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয় সেই পশ্চিমা বিশ্ব তারাও কিন্তু পারফেক্ট নয়। গণতন্ত্রের ব্যাপারে তো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়েই কত কিছু হচ্ছে। ফ্লোরিডাতে ট্রাম্পের নাম ব্যালেটে থাকবে না একজন প্রার্থী হিসেবে এ কথা বলার পর আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট এ নিয়ে বসাবসি শুরু করার পর্যায়ে রয়েছে। যেহেতু সেখানে সুপ্রিম কোর্টে রিপাবলিকানরা আসন পায় বেশি সেখানে ট্রাম্পের ক্যান্ডিডেট হিসেবে সম্ভাবনাটা আমি মনে করি আছে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টা সুপ্রিম কোর্টে গড়িয়েছে।
আগামীকাল বিশেষ বর্ধিত সভায় এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, সহিংসতা হয়েছে সেই পরিস্থিতিতে কোন কোন বিষয় গুরুত্ব পাবে জানতে চাইলে বলেন,আমাদের গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা সেটা আমরা বলেছি, আমরা একটা নির্বাচন করেছি। নির্বাচনের একটা মেনিফেস্টো আছে আমাদের কিছু কিছু নির্বাচনী অঙ্গিকার জাতির সামনে পেশ করেছি। এখন নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নই আমাদের মূল বিষয়। এই নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দলের সুদৃঢ় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। গত নির্বাচন ফ্রি ফেয়ার হয়েছে কিন্তু কৌশগত কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করেছে ৬২ জনের মতো নির্বাচিত হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগেরই লোক এবং আওয়ামী লীগের পদধারী লোক অনেকেই আছে। এখানে কিছুটা ভুল বুঝাবুঝি,মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে, দ্বন্দ্ব সংঘাত হয়েছে কোথাও কোথাও দু:খজনক ঘটনা ঘটেছে নিজেদের মধ্যে। এসব হানাহানি দলের অভ্যন্তরে যে কলহ অন্তর্কলহ দ্বন্দ্ব এসব বিষয়ের অবসান ঘটিয়ে দলকে নির্বাচন ইশতেহার বাস্তবায়নে সুদৃঢ় ঐক্য আমাদের দরকার। সব কিছু ভুলে গিয়ে আগামীতে উপজেলা নির্বাচনে আসছে, তারপর মেইন ইলেকশন আসবে এভাবে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নির্বাচন হবে। আমাদের নির্বাচনের মধ্যেই থাকতে হবে বছরব্যাপী। কাজেই নির্বাচন ঘিরে যাতে আর কোন দ্বন্দ্ব সংঘাত সৃষ্টি না হয় যাতে সে ব্যাপারে দলের সবাইকে দলের সভাপতি নির্দেশনা দিবেন।
এবারকার বর্ধিত সভা একদম উপজেলা, পৌরসভ, থানার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যারা এমপি হয়েছে তারা পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে। সবার মধ্যে একটা ঐক্যবদ্ধ আবহ তৈরি করার জন্য আসলে এই বর্ধিত সভা আহ্বান করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো: আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো: রিয়াজউদ্দিন রিয়াজসহ অন্যান্য কর্মীবৃন্দ।