শীঘ্রই চালু হবে সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌবন্দর
ভারত এবং বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানি সুবিধার জন্য চালু হচ্ছে সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌবন্দর। রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সুলতানগঞ্জ থেকে পদ্মার ওপাড়ে ভারতের মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া করা হবে।
দীর্ঘ ৫৯ বছর পর আবারও চালু হচ্ছে বাংলাদেশের রাজশাহী ও ভারতের মুর্শিদাবাদে নৌবন্দর। ফলে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি সময় ও খরচ কমবে। নৌবন্দর চালু হওয়ার খবরে আনন্দিত জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষ।
নৌ বন্দর পুরোপুরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের কৃষি ভিত্তিক রপ্তানী শুরু হবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী-লালগোলা নৌপথ বন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধির অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রমণ ও বাণিজ্য প্রটোকল সাক্ষর করেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌ পথ আবারো চালু হচ্ছে।
আগামীকাল প্রতিবেশী দুই দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
নৌ বন্দর চালু হওয়ার খবরে আনন্দিত জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষ। স্থানীয়দের প্রত্যাশা নৌ বন্দর প্রতিষ্ঠার ফলে এই এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর মাধ্যমে রাজশাহীর সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। নির্মাণ সামগ্রীসহ সব ধরণের আমদানি রপ্তানিতে সময় ও খরচ কমবে।
রাজশাহী চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদূর রহমান রিংকু বলেন, এর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে। শিক্ষা নগরী রাজশাহী পর্যটন নগরীতে পরিণত হওয়ার দ্বার উন্মোচন হবে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নৌ বন্দর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার নির্বাচনী ইশতেহার ও রাজশাহী বাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। নৌবন্দর প্রতিষ্ঠায় দুই দেশই লাভবান হবে। ভারত এই বন্দর ব্যবহার করে সেভেন সিস্টার অঞ্চলে পণ্য পরিবহন করবে। ফলে আমরা বিপুর পরিমাণ শুল্ক পাবো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা জানান, দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী প্রটোকল রুট ৫ ও ৬ এর আওতাও এই নৌ বন্দর চালু হচ্ছে। সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌ রুটের পাশাপাশি রাজশাহী- ধুলিয়ান নৌরুটও চালু করা হবে। এছাড়া পুরো প্রটোকল রুট আরিচা থেকে ময়া পর্যন্ত ২৭২ কিলোমিটার নৌ পথ চালু করতে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন বলেন, নৌ বন্দর পুরোপুরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি রপ্তানীমুখি অর্থনীতিতে পরিণত হবে। জিডিপিও ১ শতাংশ বাড়তে পারে।
নৌবন্দর চালুর হলে আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার উপর চাপ কমার ফলে রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।