সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন পেলেন যারা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। দলটির পাওয়া ৪৮ টি আসনের মধ্যে ১ টি তে শরিক ১৪ দলীয় জোটের শরিক গণতন্ত্রী পার্টিকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ জনই প্রথম বারের মত মনোনয়ন পেয়েছেন। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ৮ জনই মনোনয়ন পেয়েছেন। যার মধ্যে চারজন প্রথম। একাদশ জাতীয় সংসদের ৭ জন আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। এদের মধ্যে ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা টানা চার সংসদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দাখিল করবে। বুধবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক শেষে গণভবনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ১৫৫৩ জনের মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষে তার মধ্যে সংরক্ষিত আসনের জন্য ৪৮ টি বেছে নিতে হয়েছে। সভাপতি শেখ হাসিনার অনুমতিক্রমে সর্বসম্মিতিক্রমে ৪৮ টি আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নাম প্রকাশ করছি।। কানন আরা বেগমের নামটা স্বতন্ত্র থেকে ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রী পার্টির।
৪৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান। তিনি টানা তিন সংসদের এমপি হচ্ছেন। কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। লাইলী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জাসদকে আসন ছাড়ের জন্য তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়। তিনি নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা প্রথমবারের মত মনোনয়ন পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা এবার প্রথম মনোনয়ন পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিল। দলটির কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি এর আগে নবম ও দশম জাতীয় সংসদের এমপি ছিলেন। ঢাকা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন দলটির কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম। তিনি নবম সংসদে এ আসনটির এমপি ছিলেন। এরপর দশমে সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। আবারও সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন পেয়েছেন। প্রথমবারের মত মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির আরেক কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আটজন এমপি পদে মনোনয়ন পেয়েছেন। যাদের মধ্যে চারজন এবারই প্রথম মনোনয়ন পেয়েছেন।
টানা চতুর্থবারের মত সংরক্ষিত আসনের এমপি পদে মনোনয়ন পেয়েছেন সদ্য সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা। গত তিন সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৩ আসনে এমপি ছিলেন মুন্নুজান সুফিয়ান। গত মন্ত্রিসভার শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দ্বাদশ নির্বাচনে ওই আসনটিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন মনোনয়ন পেয়েছেন। এবার সংরক্ষিত আসনের এমপি পদে মনোনয়ন পেয়েছেন মুন্নুজান সুফিয়ান।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো দলের মনোনয়ন পেয়েছেন আরমা দত্ত, অপরাজিতা হক, নাহিদ ইজহার খান, ফরিদা খানম, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান। দ্বিতীয়বারের মত মনোনয়ন পেয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা লীগের সভাপতি শাহিদা তারেক দিপ্তী, যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি নাজমা আক্তার। মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি গত তিন সংসদে গাজীপুর-৫ আসনের এমপি ছিলেন। দ্বাদশেও মনোনয়ন পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। এবার তিনি সংরক্ষিত আসনের এমপি হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী ছাড়া বাকী ৩০ নতুন মুখ হলেন রেজিয়া ইসলাম (পঞ্চগড়), দ্রোপদী দেবী আগরওয়ালা (ঠাকুরগাঁও), আশিকা সুলতানা (নীলফামারী), যুব মহিলা লীগের সাবেক সহভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর), জারা জাবিন মাহবুব (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), রুনু রেজা (খুলনা), ফরিদা আক্তার বানু (বাগেরহাট), ফরজানা সুমি (বরগুনা), খালেদা বাহার বিউটি (ভোলা), নাজনীন নাহার রশিদ (পটুয়াখালী), জাতীয় প্রেসক্লাবের ফরিদা ইয়াসমিন (নরসিংদী), উম্মি ফরজানা সাত্তার (ময়মনসিংহ), নাদিয়া বিনতে আমিন (নেত্রকোনা), মাহফুজা সুলতানা মলি (জয়পুরহাট), লায়লা পারভীন (সাতক্ষীরা), বেদৌরা আহমেদ সালাম (গোপালগঞ্জ), পারুল আক্তার (ঢাকা), সাবেরা বেগম (ঢাকা), ঝর্ণা হাসান (ফরিদপুর), অনিমা মুক্তি গমেজ (ঢাকা), শেখ আনার কলি পুতুল (ঢাকা), মাসুদা সিদ্দীক রোজি (নরসিংদী), হাসিনা বারী চৌধুরী (ঢাকা), রুমা চক্রবর্তী (সিলেট), আশ্রাফুন নেছা (লক্ষ্মীপুর), কানন আরা বেগম (নোয়াখালী), শামীমা হারুন লুবনা (চট্টগ্রাম), দিলোয়ারা ইউসুফ (চট্টগ্রাম), জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা (রাঙামাটি), নাছিমা জামান ববি (রংপুর)।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কমিশনারের কাছে মনোনয়ন জমা দিবো। প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে।