দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে সরকারকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র- প্রধানমন্ত্রী
জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে সরকারকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না বুঝতে পেরে চক্রান্তকারীরা ভোটের আগেই এ ষড়যন্ত্র করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, সরকারকে উৎখাত করতেই এ চক্রান্ত।
জার্মানির মিউনিথ সম্মেলন পরবর্তী গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর কারসাজির সাথে জড়িতদের গণধোলাই দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।
‘নির্বাচনের আগে এক নির্বাচনী জনসভায় আপনি বলেছিলেন মার্চের দিকে দুর্ভীক্ষ করার একটি চক্রান্ত আছে। মার্চ হতে আর এক সপ্তাহ বাকি। জানিনা এই আশঙ্কা থেকে দূরে আছি কী না?’
এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র তো ছিলো। ষড়যন্ত্র তো আছে। নির্বাচনটা যাতে না হয় তারজন্য একটা বিরাট চক্রান্ত ছিলো। ২৮ অক্টোবরের ঘটনা। এর আগে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের ঘটনা। এই ঘটনাগুলো তো হঠাৎ করে হয়নি। এগুলি পরিকল্পিত ছিলো। যারা নির্বাচনের বানচালের পক্ষে ছিলো- তারা যখন দেখলো যে নির্বাচন কিছুতেই আটকাতে পারবে না। কারণ মানুষের শতস্ফূর্ততা আছে। তখন চক্রান্ত হলো যে, জিনিসের দাম বাড়বে। সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। তখন চক্রান্ত করে সরকারকে উৎখাত করবে। এটা তাদের পরিকল্পনার অংশ। এটা কাদের সেটা আপনারাই ভালো বুঝেন। আমি কারো নাম বলতে চাই না। বলার দরকারও নেই আমার। কিন্তু এ চক্রান্তটা আছে।
দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধিতে কারসাজি প্রসঙ্গে বলেন, এখানে আপনারাই বললেন ডিম লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ানো। আপনাদের কী মনে হয় না যারা সরকার উৎখাত করতে চায় তাদেরও কিছু কারসাজি আছে। এর আগে পিয়াজের খুব অভাব। দেখা গেল বস্তাকে বস্তা পঁচা পিয়াজ পানিতে ফেলে দিচ্ছে। এই লোকগুলিকে কী করা উচিত। এদের গণধোলাই দেয়া উচিত। কারণ আমরা সরকারে থেকে কিছু করলে বলবে ওই সররকার করছে। তার থেকে পাবলিক যদি এটার প্রতিকার করে তাহলে সব থেকে ভালো হয়। কেউ কিছু বলতে পারবে না। লুকিয়ে রেখে পচিয়ে ফেলে দেবে আর বলবে দাম বাড়ে। হ্যাঁ পিয়াজ আমাদের যথেষ্ট উৎপাদন হয়েছে। সেটা আমরাই শুরু করেছি। আমরা বীজ উৎপাদন করেছি। কোন কোন জায়গায় পিয়াজ উৎপাদন হয় সেটা আমরা খুঁজে বের করেছি। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে আর বাইরে থেকে আমাদের আনতে হবে না। আমদানির কথা বলা হয় এ কারণে এটা নিয়ে আপনারা নিউজ করলে তখন যারা লুকিয়ে রাখে তারা তাড়াতাড়ি বের করে। আর বাজারে এর একটা প্রভাব আসে। এটা বাস্তবতা। আমি খোলামেলা কথা বলি। এখানে লুকানোর কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি গণভবনে উৎপাদন করি। নিজের গ্রাম থেকেও পিছিয়ে নেই। নিজের পাশাপাশি আশপাশের মানুষের জমিতে উৎপাদনে উৎসাহিত করছি। অনাবাদি জমি পরিষ্কার করে চাষের দিকে মানুষকে নিয়ে আসছি।
গণমাধ্যমকর্মী ও মালিকদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব শ্রেণি পেশার মানুষকে সংসদে আনার চেষ্টা করি। দীর্ঘদিন মিলিটারী ডিকটেটরশিপ চলছে। এজন্য গণতান্ত্রিক অনুশীলনের কম সুযোগ আমাদের ছিলো। আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেটা চেষ্টা করি। এজন্য সংসদ কীভাবে কাজ করে। আমাদের সাংবিধানিক কাজ কীভাবে হয় সেটাও সকলের দেখা দরকার। জানা দরকার। সেজন্য এটা করি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী হাস্যরস করে বলেন, সাংবাদিকরা যাতে আমাদের সমালোচনা করতে না পারেন তারজন্য মনোনয়ন (সাংবাদিকদের) দিয়েছি।