বসন্তে চোখ ওঠা থেকে সতর্কতা
ফুলে ফুলে বর্ণিল বসন্ত ঋতুতে চারিদিকে প্রজাপতির মেলা থাকলেও এই ফুলের রেণু হতে পারে চোখ ওঠার কারণ। বসন্তে বাতাস শুষ্ক থাকে, তাপমাত্রায় আসে পরিবর্তন। এ সময় দেখা দেয় অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস নামক চোখের রোগ।
সাধারণভাবে কনজাংটিভার (চোখের সাদা অংশ আবৃত স্বচ্ছ ঝিল্লি) প্রদাহকে কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা বলে। আর তা যদি হয় কোনো অ্যালার্জির কারণে, তখন তাকে বলা হয় অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস। যে এজেন্টগুলো অ্যালার্জি সৃষ্টি করে সেগুলো অ্যালার্জেন হিসেবে পরিচিত।
অ্যালার্জেনের তালিকা
* পরাগরেণু
* ধুলাবালি
* প্রসাধনী (কাজল, আই লাইনার, মাশকারা ইত্যাদি)
* বায়ুদূষণ
* ধূমপান
চোখের ড্রপস (দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন অ্যান্টি গ্লুকোমা ড্রাগ ইত্যাদি)
অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসের প্রকারভেদ
সিজনাল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস : মূলত বসন্তকালে এ ধরনের কনজাংটিভাইটিস হয়ে থাকে।
ভার্নাল কেরাটো কনজাংটিভাইটিস : শিশুদের মধ্যে বেশি হয়।
জায়ান্ট প্যাপিলারি কনজাংটিভাইটিস : প্রতিদিন কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি হয়।
লক্ষণ
* চোখ লাল হয়ে যাওয়া ও পানি পড়া।
* চোখে প্রচণ্ড চুলকানি হওয়া।
* আলো সহ্য করতে না পারা।
* ঘন ঘন চোখের পলক ফেলা।
* চোখ খচখচ করা।
চিকিৎসা
অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস চিকিৎসার আগে এটি বোঝা অপরিহার্য যে, অ্যালার্জির সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। তবে ওষুধের সাহায্যে অ্যালার্জির লক্ষণগুলো দমন করা যেতে পারে।
চুলকানির কারণে চোখ ঘষলে অ্যালার্জির চেয়ে চোখের বেশি সমস্যা হয়, তাই তীব্রভাবে চোখ ঘষা যাবে না। অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলা হলো আদর্শ চিকিৎসা। কিন্তু বলা সহজ হলেও করা কঠিন। কারণ এটি জীবনযাত্রা এবং জীবনযাত্রার মানকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস কতক্ষণ স্থায়ী হয় তা নির্ভর করে ধরন, তীব্রতা এবং চিকিৎসার ওপর। চোখে ড্রপের আকারে ওষুধ যেমন মাস্ট সেল স্টেবিলাইজার, অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েড অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস চিকিৎসার জন্য দরকারি। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে চক্ষু বিশেষজ্ঞের মতামত ছাড়া চোখের ড্রপ শুরু করা উচিত নয়।
প্রতিকার
* যেকোনো ধরনের অ্যালার্জি পরিহার করা।
* বাইরে বের হলে চশমা বা সানগ্লাস ব্যবহার করা।
* হাত না ধুয়ে চোখে স্পর্শ না করা।
ঋতু পরিবর্তনের সময় নিজেদের সতর্কতাই সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করবে।