নির্বাচন বয়কট করা বিএনপির সবচেয়ে বড় ভুল-কাদের
বিএনপি নিশ্চয় এক সময় স্বীকার করবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তারা ভুল করেছে। আন্দোলনে তাদের ভুল আছে, এরচে বড় ভুল তারা নির্বাচনে আসেনি। নির্বাচন বয়কট করা বিএনপির সবচেয়ে বড় ভুল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ধানমন্ডি ৩/এ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে একটা বিষয় পরিস্কার বিএনপি এখন হতাশায় ডুবে আছে। তাদের নেতা-কর্মীরা সারা বাংলাদেশে তাদেরকে ক্ষমতার মুলো দেখিয়েছিল , দিনের শেষে দেখা গেলো যে একটা ভুল রাজনীতি, নেতিবাচক রাজনীতি তারা করে যাচ্ছে।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির এক নেতা বলেছেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবেন। এবং এই আন্দোলনে সরকারের পরিবর্তন নিশ্চিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে দেশে একটা নির্বাচন হয়ে গেলো তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা আন্দোলনের নামে দেশে সন্ত্রাসের মহড়া দিয়েছে। আগুন সন্ত্রাস করেছে। ২৮ অক্টোবরের স্মৃতি আমাদের কারো ভুলে যাবার কথা নয়। খুব দূরবর্তী বিষয় না, তারা কত ভয়ংকর। আন্দোলনের নামে কত ভয়ংকর হতে পারে বিএনপি সেটা বারবার প্রমাণ করেছে। এখন তাদের এই আন্দোলনের অর্থ বুঝি না। আন্দোলন জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া আন্দোলন সফল হবে এমন নজির পৃথিবীর কোথাও নাই। গনআন্দোলনে জনগণের সমৃক্ততা ছিলনা বলেই তারা ব্যর্থ হয়েছে।
কাদের আরও বলেন, গতকাল আমাদের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স থেকে ফিরে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন গণভবনে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সেখানে মোটামুটি তিনি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও আমাদের করণীয়, আমাদের ভূমিকা, আমাদের অবস্থান এসব নিয়ে অনেকক্ষণ লিখিত বক্তব্যের পরেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। কাজেই ঐ বিষয়গুলো নতুন করে আর বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। প্রধানমন্ত্রী বলার পর আমাদের নতুন করে আর কিছু বলার থাকেনা। কারণ উনি (প্রধানমন্ত্রী) যেটা বলেন সেটাই আমাদের বক্তব্য।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানেও আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সংকট আছে হয়তো না ,আছেই এটার জন্য আমরা দায়ী না। বিশ্বে যেভাবে যুদ্ধ প্রসারিত হচ্ছে তাতে অর্থনীতির উপর এর প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই হচ্ছে।এবং সে কারণে দ্রব্যমূল্যের উপর একটা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, দাম বাড়ছে। কিন্তু সরকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে যাতে দ্রব্যমূল্য থাকে সে ব্যাপারে যথেষ্ট তৎপরতায় কাজ করে যাচ্ছে। এবং এখানে সংশ্লিষ্ট মন্তনালয় গুলোকে প্রধানমন্ত্রী যে পরিকল্পনা দিয়েছেন, সেই পরিকল্পনা ও নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সকলেই কাজ করে যাচ্ছে। এবং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই রমজানের মাসে যে আশংকা জিনিসপত্র পাওয়া যাবেনা, ঘাটতি দেখা দেবে সে আশংকা তিনি তার বক্তব্যে দূর করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন রমজান মাসে যে সব দ্রব্যসামগ্রী অবশ্য প্রয়োজনীয় সেগুলোর কোন অভাব হবেনা।
কাদের আরও বলেন, এখানে একটা বিষয় আজকে বলতে চাই,যারা (বিএনপি) ক্ষমতায় থাকতে দিনে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো এবং সেখানে বিদ্যুৎ ৫ বছরে ৯ বার বিদ্যুৎ এর দাম বাড়িয়েছিল বিএনপি। আর আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৯ হাজার ৭ মেগাওয়াট উন্নতি করেছে।
তিনি আরও বলেন,এখন বিদ্যুৎ এ আমাদের যথেষ্ট ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।এই ভর্তুকি আমরা দিনে দিনে কমাতে চাই এবং সে কারণে সেখানে একটা সমন্বয় করা জরুরি হয়ে পড়েছে । বিদ্যুৎ সুবিধা আমরা যদি বজায় রাখতে চাই তাহলে সমন্বয়টা করতে হবে। এটা একটা বিষয়।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন তারা উপলব্ধি করছে, দলের বড় বড় নেতাদের বক্তব্যও আসতে পারে। এখানে উপজেলা নির্বাচন নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বিধা দ্বন্দ্ব চলছে। স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করছে না।
বিএনপির আরেকটা অভিযোগ এই সরকার ব্যবসায়ীদের সরকার এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, এটা বিএনপি নেতারা বলবেনই। যারা বলছে আসলেই তারাই ছিল ব্যবসায়ী সরকার। আজকে এক জায়গায় ডিম পাওয়া গেছে। এ ধরনের যারা ব্যবসা করে তারা বিএনপির পৃষ্টপোষকতায় করছে বললে ভুল হবেনা। এটার তাদের পুরোনো অভ্যাস। দ্রব্যমূল্যের দাম কোন দেশে নিয়ন্ত্রণে আছে? যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে কোথায় আছে?কোথাও নাই । বিশ্বের যে পরিস্থিতি, দুনিয়াটাই মনে হচ্ছে রণক্ষেত্র। রাশিয়া-ইউক্রেন,গাজা-ইসরাইল, কঙ্গো-রোয়ান্ডা সব জায়গায় যুদ্ধ চলছে।এখানে আরেকটা যুদ্ধ।যুদ্ধ এখন সারা দুনিয়ায় চলছে,আর যুদ্ধ মানেই জিনিসপত্র দাম। কোন লোক কি না খেয়ে মারা গেছে এতো সংকটের মধ্যে? বাজারে কি ক্রেতার অভাব আছে।?দাম বাড়ছে বাড়ছে। আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আযম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো: আবদুস সবুর, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল চ্যাটার্জি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো: রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।