বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

মহানগর বিএনপির বেহাল দশা

মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক (প্রিন্ট সংস্করণ) / ৪৩৯ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

  • হাঁকডাক দিয়েই চলছে ঢাকা মহানগর বিএনপি

  • দিতে হচ্ছে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের খেসারত

  • টাকা দিলেই পদ মেলে কাঠগড়ায় হাইকমান্ড

বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর কমিটি। কিন্তু রাজধানীতেই কোণঠাসা হয়ে আছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। পদ-পদবির ভাগাভাগি, ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে দলীয় কোন্দল। মূল দল থেকে শুরু করে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি স্তরে রয়েছে গ্রুপিং। বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন। স্বার্থে টান লাগলেই একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হচ্ছেন। শুধু তৃণমূল নয়, কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও এ সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। পুরো বিষয়টি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড।

তবে মহানগর নেতারা বলছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকার প্রতিটি স্তরে সংগঠনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। যারা বিগত দিনে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন তাদেরকে মূল্যায়ণ করা হবে। যারা কমিটিতে থেকেও দলীয় নির্দেশনা মেনে রাজপথে থাকেনি তাদেরকে বাদ দেয়া হবে। কেননা হতাশ নেতাকর্মীদের সক্রিয় করে কীভাবে পুনরুজ্জীবীত করবে নতুন কমিটি তা নিয়েও নির্দেশনা দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড।

মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, দল পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হলো অভ্যন্তরীণ কোন্দল। তারপরও দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা নিরসনে নতুন কমিটি কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের পর ঢাকা মহানগর বিএনপিকে শক্তিশালী করতে নানা উদ্যোগ নিয়েও দলটির হাইকমান্ড ব্যর্থ হয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ এই কমিটি নিয়ে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড। অথচ আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার রাজধানী ঢাকা। সেই রাজধানীতেই দলীয় সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারছে না বিএনপি। বেশ কয়েকবার নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেও সফলতার মুখ দেখেনি দলটি। বরং যাকেই নেতৃত্বে নিয়ে আসা হয় তিনিই নতুন কমিটি গঠনকে ঘিরে নিজের বলয় তৈরির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন। ফলশ্রুতিতে বিএনপির রাজনীতিতে এক সময়ের প্রাণশক্তি ঢাকা মহানগর বিএনপি এখন অচল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মহানগর বিএনপির কোনো কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

একদিকে কমিটি গঠনকে ঘিরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে; অপরদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন আত্মগোপনে, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু কারাবন্দি। তানভীর আহমেদ রবিনকে ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব করার পর কিছুটা গতি এলেও কিছুদিন পর তার গ্রেপ্তারে ফের স্থবিরতা নেমে আসে দক্ষিণ বিএনপির কার্যক্রমে। সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্ত হলেও তাকে দেয়া হয় পূর্বের দায়িত্ব। বরং তার গ্রেপ্তারের পর যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনিও থাকছেন অনেকটাই নিস্ক্রিয়। এছাড়াও, আন্দোলন করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা মামলায় জড়িয়ে পড়ায় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা মহানগরে বিএনপির এখন বেহাল দশা। সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নেয়া তো দূরে থাক মহানগর কার্যালয়েও তেমন কেউ যায় না। এখন ঢাকা মহানগর বিএনপির কার্যক্রম নিয়ে হতাশ স্বয়ং বিএনপির হাইকমান্ড।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক সোনালী বার্তাকে বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকা মহানগরকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়ে তারা কাজ করছেন। বিগত দিনে রাজপথে যারা স্বক্রিয় ছিলেন তাদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। বিতর্কিত ও যারা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিলেন না অথচ কমিটিতে আছেন তাদেরকে বাদ দেয়া হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কমিটির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সঙ্গে আমার বোঝাপড়া ভালো। আমরা মিলেমিশেই কাজ করছি। তারপরও কিছু সমস্যা থাকতে পারে। আমি তো নিজেকে শতভাগ নির্ভূল মানুষ দাবি করছি না। তবে সংগঠন পরিচালনায় কোনো কিছুর বিনিময়ে আমি যদি কারও কাছ থেকে এক কাপ চা খেয়েছি, কিংবা এক সূতা পরিমাণ কোনো কিছুর বিনিময়ে উপঢৌকন নিয়েছি- সেটি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি থেকে সরে যাব। আমি সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এখন কেউ যদি বিরোধীতার খাতিরে মিথ্যাচার করে থাকে সেটি তো আমি বন্ধ করতে পারব না।

এদিকে, নেতৃত্বের ভুল মাশুলে বার বার আন্দোলনের ডাক দিলেও ঢাকা মহানগরে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। ২০১৪ সালের ০৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও সারাদেশের নেতাকর্মীরা যখন মাঠে থাকার চেষ্টা করেছেন, সেখানেও ভিন্ন মেজাজে ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দেখা গেছে। কঠোর কোনো আন্দোলন এখানে গড়ে ওঠেনি। মিছিল নিয়ে রাজপথে বের হওয়ার সাহস দেখায়নি বলতে গেলে কেউ-ই। থানা-ওয়ার্ডভিত্তিক কর্মসূচিগুলো ছিল গলির ভেতরেই সীমাবদ্ধ। সবশেষ দ্বাদশ নির্বাচনের আগেও নানা কর্মসূচিতে সারাদেশ উত্তাল হলেও নিরব থেকেছে ঢাকা মহানগর বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

অথচ বিএনপির হাইকমান্ড ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়ার পরও কমিটি গঠন নিয়ে যে বিভক্তি বা জটিলতা তৈরি হয়, তাতে করে মহানগরীর নেতাকর্মীদের একটি অংশ দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন। আবার অনেকে রাজনীতি ছেড়েও দিয়েছেন। তারপরও সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ঢাকা মহানগর বিএনপি। বরং সারাদেশে দলটির নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলেও ঢাকা মহানগরের তেমন ভূমিকা ছিল না। বরং মহানগর নেতাকর্মীরা কেউ স্বেচ্ছায় কারাবরণ হয়েছে আবার কেউ কর্মসূচি ঘোষণার আগে-পরে গা ঢাকা দিয়েছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে একধরনের আত্মগোপনে চলে যান দায়িত্বশীল নেতারা। ফলে মহানগরের প্রতিটি ইউনিট, ওয়ার্ড এবং থানা কমিটির নেতাকর্মীরা কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নে এবারও কোনো দিক-নির্দেশনা পায়নি। দলীয় হাউকমান্ডের নির্দেশনায় সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় জড়ো হলেও তাদের কোনো প্রকার দিক-নির্দেশনা দেয়া তো দূরে থাক মহানগরের দায়িত্বশীল কোনো নেতারা যোগাযোগই রাখেননি। ফলে আন্দোলন চূড়ান্ত সফলতার মুখ দেখতে পায়নি।

বিগত তিন কমিটির ধারাবাহিকতায় বর্তমান কমিটির নেতৃত্ব নিয়েও তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব। গ্রুপের রাজনীতি এখন অনেকটা প্রকাশ্যে। সম্পতি ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত আহ্বায়ককে তা জানানো হয়নি। এ নিয়ে তৈরি হয় দ্বন্দ্ব। এ নিয়ে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের মধ্যে বাগবিতা-াও হয়েছে বলে জানা গেছে।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভাষ্য, ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুর্বল রেখে আন্দোলনে গেলে কোনো প্রকার সফলতা আসবে না। কারণ মহানগরের নেতা হতে ত্যাগ লাগে না তাদের অর্থ থাকলেও পদ-পদবী জুটে যাচ্ছে। আর কেউ যদি টাকা খরচ করে পদ ও পদবী পেয়ে যায় তাহলে তার রাজপথে নামার কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকে না। বরং তারা মনে করে, টাকা থাকলে দলে নেতৃত্ব দিতে পারব তাহলে শুধু শুধু রাজপথে নেমে কী হবে?

আর মহানগর নেতারা বলছেন, নিজ বলয়ের লোকদের কমিটিতে পদায়ন করতে গিয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও তীব্র হচ্ছে। দুই মহানগরেই দীর্ঘদিনের গ্রুপিং রাজনীতি রয়েছে। এ বৃত্ত থেকে বেরুতে পারছে না দলটির দায়িত্বশীলরাও। প্রভাব পড়েছে আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নেও। ফলে বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবি তুলেছেন নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, আন্দোলন সফল করার জন্য তিনবার ঢাকা মহানগর কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব আনা হয়েছিল। কিন্তু একটি কমিটিও রাজপথের আন্দোলনে সফলতা দেখাতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ হলো গ্রুপিং রাজনীতি। এক গ্রুপের নেতারা দ্বায়িত্ব পেলে অন্য গ্রুপ নিস্ক্রিয় থাকে। ফলে একযোগে মহানগর বিএনপি মাঠের আন্দোলনে নামতে পারছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন প্রভাবশালী ভাইস চেয়ারম্যান সোনালী বার্তাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের আমান-আমিনুল কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন রূপে মহানগর কমিটি দেখা যেতে পারে এমন আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু দিন দিন সেই আশা ফিকে হয়ে যায়। একই ভাবে ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণে সালাম-মজনু কমিটিও মহানগরের রাজনীতি গতিশীল করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। কিন্তু হাঁকডাক দিয়েই শেষ। আন্দোলন শুরু হলে আত্মগোপনে চলে যান আহ্বায়ক নিজেই।

তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছাড়াও নানামুখী সমস্যায় থাকার কারণে ঢাকা মহানগর বিএনপি এখন আগের মতো সক্রিয় হতে পারছে না। বিশেষ করে অধিকাংশ নেতার নামে মামলা রয়েছে। মামলার কারণে কেউ কারাগারে, কেউ পলাতক ও কেউ ঝামেলা এড়াতে দলীয় কর্মকা- থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন।

অবশ্য আমান উল্লাহ আমান গ্রেপ্তার হলে দলের চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দায়িত্ব নিয়ে নিস্ক্রিয় নেতাদের আন্দোলনে সক্রিয় করে তোলেন। সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বে রদবদল আনেন। নিজ নিজ এলাকাভিত্তিক নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব দেন। কিন্তু পুরানো নেতাদের অবমূল্যায়ণ করার ফলে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েন গত কমিটির নেতারা। নতুন ও পুরানোদের মধ্যে বিভাজনটা স্পষ্ট হয়ে উঠে। বলা হয়, পুরানো কর্তৃত্বই মূল বাধা।

ঢাকা মহানগরের এক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক নেতা এম এম কাইয়ূমের অনুসারীরা কমিটিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে তারা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েন। ফরহাদ হালিম ডোনারকে দ্বায়িত্ব দেয়া হলে কাইয়ূম অনুসারীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেন। কিন্তু আগের কমিটির দুই/একজন ছাড়া সবাই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েন।

মহানগর বিএনপির দপ্তর সূত্র মতে, ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণে গত আড়াই বছরে একটি থানা কমিটিও গঠন করতে পারেনি। তবে সাংগঠনিক ৮০টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ থেকে সাতটি আহ্বায়ক কমিটি ছাড়া বাকি সবকটি ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয়া হয়েছে। এছাড়া বর্তমান সদস্য সচিব রফিকুল আলম মঞ্জু কারাগারে রয়েছেন। পরবর্তীতে আনভীর আহমেদ রবিনকে ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি গ্রেপ্তার হলে লিটন মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে রবিন কারামুক্ত থাকলেও তাকে আর দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।

এদিকে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে প্রকাশ্যে আসছেন না ঢাকা মহানগর বিএনপির দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম। সদস্য সচিব আছেন কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত সদস্যের দায়িত্ব দেওয়া হলে তাকেও গ্রেপ্তার কারানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, যাদের কমিটিতে রাখা হলো তারা অদক্ষ, অযোগ্য, দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নেই। কেউ কেউ একবারেই নতুন ছিল। মহানগর রাজনীতি তারাই করেন যারা ১০/১৫ বছর দল করে আসছেন। এখানে এসে কিছু বিবেচনায় না নিয়ে ব্যক্তি বলয়ের লোক পদায়ন করা হয়। কমিটিতে স্থান না পেয়ে অনেক নিস্ক্রিয় হয়ে যান। ফলে সংগঠন দূর্বল হয়েছে। দীর্ঘ সময় আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও সাংগঠনিক কোনো স্পিরিট থাকে না। তৈরি হচ্ছে না অলটারনেটিভ লিডারও। বিগত আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণ হিসেবে কমিটি গঠনের সময় আর্থিক লেনদেন করা পদায়ন করা হয়েছে। যে কারণে আন্দোলনের সময় তাদের মাঠে পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, কাফরুল থানা, মিরপুর, শাহআলী, দারুসসালাম, উত্তরা পশ্চিম, খিলক্ষেত থানা, গুলশান, ভাটারা সরাসরি লেনদেন হয়েছে। কিছু কিছু পকেট কমিটি হয়েছে। বিমানবন্দর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ থানা আংশিক। ব্যক্তি পরিচয়ে একটি কমিটির আহ্বায়ক বাদ দিয়ে সব নিয়ে গেছেন এক নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, যারা টাকার বিনিময়ে পদ বাগিয়েছে নিয়েছেন তারা কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর হাওয়ায় মিলিয়ে গেছেন। তারা কেন মাঠে থাকল না এর কৈফিয়ত চাইলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সাইদুর রহমান মিন্টু সোনালী বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের কাজকর্ম চলমান আছে। আমাদের আহ্বায়ক জুম অথবা হোটসএ্যাপে যোগযোগ রাখছেন। বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনায় হয়তো সাংগঠনিক দিকে নজর দিতে হবে। আমরা থানা কমিটিগুলো করবে।’

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণে অনেক নেতার মামলার রায় হয়েছে, পুরান ঢাকার বেশি। যারা কারাগারে আছেন তাদের মুক্তির বিষয়ে নজর দেওয়া হচ্ছে।’

ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, ‘সাংগঠনিক কর্মকা- চলমান আছে। ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৬টি থানা কমিটির মধ্যে ২৫টি আছে। শের-ই-বাংলা নগর থানা কমিটি স্থগিত আছে। কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করা হবে। আশা করি রোজার মধ্যে আমরা কমিটিগুলো গোছাতে পারবো।

সোনালী বার্তা/এমএইচ/এসআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর