গাজায় নৃশংসতা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে একজোট হওয়ার আহ্বান
এ বছর পবিত্র রমজান মাস শুরু হলে সকল মুসলিমরা রমজানে প্রস্তুতি নিলেও ফিলিস্তিনবাসীর জীবনে চলছে নারকীয় নৃশংসতা। সৌদি বাদশাহ বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য বেদনাদায়ক যে ফিলিস্তিনে আমাদের ভাইয়েরা যখন হামলার শিকার হচ্ছেন, তখন এ বছর রমজান মাস এসেছে।’
ফিলিস্তিনের গাজায় ‘নৃশংস অপরাধ’ বন্ধ এবং ‘নিরাপদ মানবিক করিডরের ব্যবস্থা’ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার মধ্যে দেশটির নাম উল্লেখ না করে রোববার এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাদশাহর পক্ষে লিখিত বক্তব্যটি পাঠ করেন তথ্যমন্ত্রী সালমান আল-দোসারি। সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে সোমবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়া উপলক্ষে এই বক্তব্য দেন সালমান বিন আবদুল আজিজ।
এবারের রমজানে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার চিত্রটা ভিন্ন হতে যাচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে উপত্যকাটির বাসিন্দারা রমজানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যখন সেখানে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
গাজায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইসরায়েলের হামলা। উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় সেখানে অন্তত ৩১ হাজার ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ৬৫৪ জন। এর মধ্যে আগের ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ৮৫ জন।
শুধু রক্তক্ষয়ই নয়, রমজানের আগমুহূর্তে ক্ষুধাও বিপর্যস্ত করেছে গাজাবাসীকে। গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে উপত্যকাটিতে অনাহারে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, উত্তর গাজার অবস্থা মর্মান্তিক। বারবার আহ্বান জানানোর পরও সেখানে সড়কপথে ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে না। আর রমজান যখন এগিয়ে আসছে, তখন প্রাণহানিও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে গাজা পৌর কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলমান সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক হাজারের বেশি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে।
রমজানের আগে গাজাবাসীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে একটি বার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, ‘গাজায় যাঁরা ভয়াবহ দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি সংহতি ও সমর্থন জানাচ্ছি আমি। এ কঠিন সময়ে রমজান আমাদের আশার আলো দেখাবে।’