কল্পনা হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করলো-পিবিআই
একই গ্রামের বাসিন্দা দুই বন্ধু মাহবুব ও মোশারফ। তারা কাশিমপুর ও আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন কারখানায় একসাথে চাকুরি করতো। চাকরি করাকালীন কল্পনা আক্তার কল্প (৩২) নামের এক নারীর সাথে পরিচয় ও পর্যায়ক্রমে সুসম্পর্ক তৈরী হয়। পরবর্তীতে তারা কল্পনার সাথে দেখা সাক্ষাত করতো এবং টাকার বিনিময়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতো। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ‘শারীরিক সম্পর্কের পর লেনদেন নিয়ে’ ঝগড়া হলে কল্পনাকে শ্বাসরোধেই ওই দুই বন্ধুই হত্যা করে।
আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানার তেঁতুলিয়া গ্রামের জাহিদুল হাসানের ছেলে মো. মাহবুব আলম (২৯) ও একই গ্রামের আবুল কালাম চৌধুরীর ছেলে মো. মোশারফ হোসেন (৩২) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মাহবুবকে গত সোমবার (১১ই মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য মতে সাভারের আশুলিয়া থানার আমতলা কাঠগড়া এলাকা থেকে মঙ্গলবার (১২ই মার্চ) রাতে মোশারফকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানা পুলিশ ২০২১ সালের ২ মার্চ দুপুরে ১টার দিকে পানিশাইল গ্রামের জিরানী ডাক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পুকুর থেকে অজ্ঞাতনামা অর্ধ উলঙ্গ এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় এবং থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা রুজুর পর ৮ মাস কাশিমপুর থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে কোন রহস্য উদঘাটন করতে না পিবিআই গাজীপুর ইউনিট মামলাটি তদন্ত ভার পায়।
পিবিআই সকল তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ করে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দুই বন্ধু মাহবুবকে প্রথমে গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে মাহবুবের দেয়া তথ্যমতে সাভারের আশুলিয়া থেকে মোশারফকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা কাশিমপুর ও আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় চাকুরি করার সুবাদে কল্পনা আক্তার কল্প’র সাথে পরিচয় ও ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়।
এর প্রেক্ষিতে আসামী দুই বন্ধু বিভিন্ন জায়গায় কল্পনার সাথে দেখা সাক্ষাত করতো এবং টাকার বিনিময়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতো। ঘটনার দিন গভীর রাতে দুই বন্ধু কল্পনাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে এসে শারীরিক সম্পর্ক করে। এ নিয়ে কল্পনার সাথে আসামী দুই বন্ধু’র ঝগড়া হয়। পরে দুই বন্ধু কল্পনাকে ঘটনাস্থলেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে চলে যায়।
পুলিশ সুপার জানান, একটি হত্যার ঘটনা। ভিকটিম কল্পনাকে নিয়ে দুই আসামী অনৈতিক কাজ করে। পরে টাকা পয়সা নিয়ে ভিকটিমের সাথে ঝামেলা সৃষ্টি হলে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
‘পিবিআই গাজীপুর তথ্য সংগ্রহসহ সকল তথ্য প্রমাণ বিচার বিশ্লেষণ করে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করে এবং আসামীদ্বয় মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে।’