রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন

ভারতের কারণে নির্বাচনে কোনো অশুভ খেলা হয়নি : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৭৫ Time View
Update : শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গত নির্বাচনে প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে এগোতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল বলেই অনেক বড় দেশের অশুভ খেলা সফল হয়নি। এসময় তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতের সাথে গায়ে পড়ে তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি করে সমস্যার সমাধান সম্ভব না। ভারতের সাথে যে অবিশ্বাসের দেয়াল তৈরি হয়েছিল শেখ হাসিনা ও মোদি সরকার তা ভেঙে দিয়েছে।

তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো বলেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করে ৬৮ বছরের সমস্যা শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছেন। আমি এই কৃতিত্ব দেবো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিকে। দীর্ঘ দিনের অবিশ্বাস-সন্দেহের দেয়াল তারা ভেঙে দিয়েছেন। অবিশ্বাস, সন্দেহের দেয়াল রেখে কোনো কিছু সমাধান সম্ভব নয়। আজকে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বিষয়ে গঙ্গা চুক্তিও আমরা করেছি। তিস্তা নদী নিয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এর সমাধানও অবশ্যই হবে। গায়ে পড়ে তিক্ততা সৃষ্টি করে সমাধান সম্ভব নয়।

ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু একটি দাসত্বের শিকল বলে উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা মন মানসিকতায় যদি ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগেন, মাইনোরিটি ভাবনাটাই একটা দাসত্বের শিকল। এই দাসত্বের শিকল ভেঙে ফেলতে হবে। মুসলমানের ভোট, আপনার ভোট, কি মূল্য কম? কোন পার্থক্য কি আছে? তাহলে কেন নিজেকে মাইনরিটি ভাববেন? এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের পাশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার অবদান রয়েছে, কারো অবদান কম নয়।

তিনি আরো বলেন, যারা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ, ধর্মীয় মন্দির এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে তাদের মনে কষ্ট দেন, মন ভেঙে ফেলেন, এসব লোক রাজনৈতিক পরিচয়ে যদিও থাকেন তাদের আসল পরিচয় দুর্বৃত্ত। এরাই হিন্দুদের বাড়ি দখল করে। মন্দির ভাঙচুর করে। এরা আমাদের সবার অভিন্ন শত্রু। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

সেতুমন্ত্রী বলেন, যখন কথা বলি তখন বিশ্বাস থেকেই কথা বলি। এই বাংলাদেশে ৭৫ থেকে একুশ বছর কারা শাসন করেছিল, সেই একুশ বছর প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল।

সম্মেলনে হিন্দু নেতারা বলেন, সব ধর্ম বর্ণের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করলেও এখনো এ দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হয়। দুঃখজনকভাবে তাদের ব্যক্তিগত ও মন্দিরের জমি সম্পত্তি এখনো বেদখল হয়। ভাঙ্গা হয় হিন্দুদের আরাধ্য দেব-দেবীর প্রতিমা।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ১৯৭১ সালের বন্ধনে বাংলাদেশ এবং ভারতের বন্ধুত্বের যে সম্পর্ক তা আগামী দিনে আরও সমৃদ্ধ হবে। চার প্রজন্ম ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্য, শিল্প, সাহিত্যের যে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়- তা আরও জোরদার হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী জে এল ভোমিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী শ্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন, পাবত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার।

এমআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর