বিশ্বের শোষিত মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু : সাজ্জাদুল হাসান

বেসামরিক বিমান পরিহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও প্রাক্তন সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান বলেছেন, ‘যারা ধর্মকে রাজনীতি হিসেবে ব্যবহার করছে তারাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করছে।’
রোববার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নজরুল ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় নভেল লরিয়েট অমর্ত্য সেন তিনি সেকুলারিজম সম্পর্কে একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেখানে রেহমান সোবহানও ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ওয়ার্ল্ড লিডার কেন লার্ন শেখ মুজিব রিগার্ডস সেকুলারিজম।’বঙ্গবন্ধু পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, হিন্দুরা হিন্দু ধর্মকে পালন করবে, বৌদ্ধরা বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা খিষ্ট্রান ধর্ম পালন করবে। তবে ধর্মকে রাজনীতি হিসেবে ব্যবহার করতে দেব না।’
সাজ্জাদুল হাসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের না সারা বিশ্বের শোষিত মানুষের নেতা। বিশ্ব পরিমণ্ডলে একজন অনন্য নেতা হিসেবে তিনি স্বীকৃত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কয়েকটি প্রজন্ম ৭ই মার্চের সুযোগ দেয়নি। অথচ আজ ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যখন বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছিল তখন বিশ্বের বরেণ্য অনেক নেতা দেশে এসেছিলেন। অনেক বাণী দিয়েছেন। অনেকের বক্তব্য রেকর্ড করে পাঠিয়েছেন। পৃথিবীর এমন কোনো নেতা নেই যারা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে অনন্য নেতা হিসেবে প্রসংশা করেনি।’
‘বঙ্গবন্ধু জীবনের প্রায় সারাটা জীবন এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন করে গেছেন। জীবনের প্রায় ১৪ টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। এই যুদ্ধবিদ্ধস্থ বাংলাদেশকে গড়ার জন্য তিনি মাত্র সাড়ে ৩ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দেশটা স্বাধীন করে দিয়েছি, সোনার বাংলা দেখে মরতে চাই।’ কিন্ত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে দেশী কিছু কুলাঙ্গার ১৫ আগস্ট শুধু জাতির পিতা এবং তার সধর্মিনীসহ পরিবারের ১৮ জনকে হত্যা করে।’
এ সময় সাজ্জাদুল হাসান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রবীন্দ্র ও নজরুলকে কী রকম শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন তার বর্ণনা করেন। এর আগে তিনি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং তা পরিবর্তী সব আন্দোলনে সব শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে লে. ক. (অব.)স্বাধীনতা পদক ও পদ্মশ্রী (ভারত) পদকপ্রাপ্র সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্যতা, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা অত:পর স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন নজরুল ইন্সটিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল ও কাজী নজরুল ইন্সটিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন।
আয়োজক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ও নজরুল গবেষক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ’র সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন নজরুল ইন্সটিটিউটের পরিচালক মো. রায়হান কাওছার। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী সালাউদ্দিন, প্রিয়াঙ্কা গোপ, পলাশসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্পীরা।