ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাইকে শ্রদ্ধা জানালো আওয়ামী লীগ
ঝিনাইদহ-১ আসনের সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাঁর কফিনে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আজ রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে রাজধানীর ন্যামভবণে সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল হাইকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই গত শনিবার থ্যাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
এর আগে আব্দুল হাই নিউমোনিয়া ও লিভারের সমস্যায় ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে থাইল্যান্ডে নেওয়া হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সমবেদনা জানিয়েছেন শোকসন্তপ্ত পরিবারের সকলের প্রতি।
সদ্য প্রয়াত আব্দুল হাইয়ের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: মতিউর রহমান বলেন, আব্দুল হাই আমাদের বটবৃক্ষ ছিলেন। তার উপস্থিতিতে কোন ঝড়-ঝাপটা আমাদের লাগতে দেননি।
তার মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো আমাদের জন্য। আমরা অভিভাবকহারা হয়ে গেলাম। এমন নেতা দ্বিতীয় আর কাওকে পাবো কিনা জানিনা। তার বিকল্প এখন পর্যন্ত কেউ নাই।
শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান, জনাব আব্দুল হাইয়ের রাজনৈতিক ও পারিবারিক ছায়াসঙ্গী এম আব্দুল হাকিম বলেন, পিতাকে হারিয়ে সন্তান কেমন থাকতে পারে? কেমন অনুভূতি হয় সন্তানের? পৃথিবীর যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই শুন্যতা গ্রাস করে। আজকে আমাদের পিতা, রাজনৈতিক গুরু, আমার নেতাকে হারিয়ে কিছু বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা।
তিনি আমাদের সকলের অভিভাবক ছিলেন।
পৌরসভা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান ইকু বলেন, আমি বাবা-মা হারা সন্তান। আমার বাবা-মা দুজনেই এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। বাবা আমৃত্যু আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আব্দুল হাইয়ের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ছিলেন আমার বাবা। বাবা-মা হারানো এতিম আমাকে আব্দুল হাই বুকে টেনে নিয়েছিলেন। নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখে আমাকে পৌরসভা আওয়ামী লীগের নেতা বানিয়েছেন, একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পর্যন্ত বানিয়েছেন। সুতরাং তাকে নিয়ে অনেক কথা বলার আছে। কী অমূল্য সম্পদ হারালাম এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আমাকে চিরতরে এতিম করে চলে গেলেন হাই চাচা। আমার আশ্রয়, আস্থার কেউ রইল না।
শৈলকূপা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ৯নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসীদের হাতে আমার বাবা নির্মমভাবে হত্যার শিকার হলে আব্দুল হাই আমাদের বৃহৎ পরিবারের সবাইকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। আমাকে দলের দুর্দিনে ছাত্রলীগের নেতা বানিয়েছিলেন সর্বশেষ একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। কী দেননি আমাদের জন্য?
বাবাকে হারানোর পর তাঁকে পেয়ে বাবা হারানোর শোক কাটিয়ে উঠেছিলাম। আজ তিনিও চলে গেলেন।