বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষক দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৬০ Time View
Update : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
ছবি সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদালত শিক্ষক দ্বীন ইসলামের একদিন ও অবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। সোমবার (১৮ মার্চ) কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সিদ্দিক তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সোমবার সকালে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর পাঁচ দিন এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের দুই দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানা-পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লার বাগিচাগাওয়ের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। এর আগে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তাঁর মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তাঁর সহপাঠী আম্মানকে দায়ী করেন। অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনার পরই দায়ীদের বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত দ্বীন ইসলাম ও শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর গত শনিবার কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন অবন্তিকার মা। শনিবারই দ্বীন ইসলাম ও আম্মানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এজাহারে অবন্তিকার মা উল্লেখ করেছেন, ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা (২৪) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিল। আমার মেয়ে মেধা তালিকা অনুসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে সিট পায়। অবন্তিকা আমাকে জানায়, তার ক্লাসমেট রায়হান সিদ্দিক আম্মান বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে যৌন হয়রানিমূলক নিপীড়ন দেয় ও বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে জানানোর পরও তিনি আম্মানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো আম্মানের পক্ষ নিয়ে আমার মেয়েকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। এজন্য আমার মেয়ে হোস্টেলে থাকাটা নিরাপদ মনে না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ছাত্রীদের মেসে থাকা শুরু করে।

কিন্তু তাতেও অভিযুক্ত দুজন ক্ষান্ত হননি। তারা অবন্তিকার কয়েকজন ক্লাসমেটের মাধ্যমে তার চলা ফেরার প্রতি নজর রাখতে শুরু করে। তাদের মাধ্যমেও আমার মেয়েকে বিভিন্ন মাধ্যমে মানসিক নিপীড়ন দিতে থাকে। এরই মধ্যে গত ১৪ মার্চ অবন্তিকা কুমিল্লার বাসায় চলে আসে। অন্যমনস্ক অবন্তিকা আমাকে জানায়, যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ছেড়ে মেসে উঠেছিল সে সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। অর্থাৎ বিবাদী রায়হান সিদ্দিক আম্মান আগের চেয়ে আরও বেশি পরিমাণে আমার মেয়ের সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক কুরুচিপূর্ণ আচরণ করছে।

তাহমিনা বেগম দাবি করেন, সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম আম্মানের পক্ষ নিয়ে আমার মেয়েকে ৬ থেকে ৭ বার অফিসে ডেকে অপদস্থ করেন। মেয়ে কুমিল্লা চলে আসলেও তাকে খারাপ মেয়ে হিসেবে প্রচার করবে, যেন আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। এসব কারণে আমার মেয়ে কুমিল্লা নগরীর বাঁগিচাগাও বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।

এরপর গতকাল রোববার (১৭ মার্চ) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের খণ্ডিত অংশের সত্যতা হয়ত আছে। যা যা প্রকাশিত হয়েছে সব যে মিলেছে তা নয়। তবে প্রাথমিকভাবে সত্যতা আছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, নানা ঘটনা প্রবাহে অবন্তিকা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। তদন্তে যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

দ্বীন ইসলাম ও রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে গ্রেপ্তারের পর কুমিল্লার কোতয়ালী থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ডিএমপি।

এমআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর