গ্রেপ্তার হলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা ইডি। শুক্রবার এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইডির একটি দল কেজরিওয়ালকে জেরা করতে তাঁর বাসভবনে পৌঁছয়। তারা তিনটি সেল ফোন ও দুইটি আইপ্যাড বাজেয়াপ্ত করে।
তারপর কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার আগে কেজরিওয়াল এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট সেই স্থগিতাদেশ দেননি। এর পরই ইডি আবগারি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে আম আদমি পার্টির (আপ) সদস্যরা দিল্লির রাস্তায় নেমে পড়েন প্রতিবাদ দেখাতে। কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে দলটির প্রচুর কর্মী জড়ো হন। ছিলেন আপ নেতা ও মন্ত্রীরাও। কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রচুর জোয়ান মোতায়েন করা হয়।
যত সময় যায়, ততই তাদের সংখ্যা বাড়ে।
দিল্লির মন্ত্রী অতিশি জানিয়ে দেন, ‘কেজরিওয়াল পদত্যাগ করবেন না। দরকার হলে তিনি জেলে বসে কাজ করবেন। কারণ রাজনৈতিক কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আপ নেতা সোমনাথ ভারতীও জানিয়ে দেন, ‘কেজরিওয়ালের পদত্যাগ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
বিজেপির রাজত্বে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। এখানে নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই।’
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্য আবেদন জানাবেন কেজরিওয়াল। ভারতে কিছুদিন আগেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমংন্ত সোরেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার করা হলো কেজরিওয়ালকে। তবে গ্রেপ্তারের আগে সোরেন পদত্যাগ করেছিলেন।
এর আগে একই অভিযোগে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আপ সংসদ সদস্য সঞ্জয় সিংকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার করা হলো অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে।
ভারতে লোকসভা ভোট যখন আসন্ন, তখন এভাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে? প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ‘এর ফলে কেজরিওয়াল মানুষের সহানুভূতি পাবেন বলে মনে হয়। তিনি নিজেও সম্ভবত এটাই চাইছিলেন। সেজন্য বারবার ডাকা সত্ত্বেও তিনি ইডির অফিসে যাননি।’
শুভাশিস বলেছেন, ‘এটা বারবার ঘটছে। পরপর ঘটছে। তাই মানুষের মনে সন্দেহ জাগতেই পারে।’
কেজরিওয়াল এক সময় দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এখন দুর্নীতির অভিযোগে ইডি তাঁকে গ্রেপ্তার করল।