সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

নবজাতককে আটকে রেখে হাসপাতালের বিল আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১২৯ Time View
Update : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
ছবি সংগৃহীত

নবজাতককে আটকে রেখে বিল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ডেল্টা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। আল আমিন নামে এক পোশাক শ্রমিকের অভিযোগ, ২০ হাজার টাকায় সিজার করিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনদিন পর প্রায় দুই লাখ টাকা বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দালালের খপ্পরে পড়ে গত ৪ মার্চ নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ডেলটা হেলথ কেয়ার হাসপাতালে যান পোশাক শ্রমিক মো. আল আমিন। সেখানে তাদের যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। নবজাতক দুটির জটিলতা রয়েছে জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) নেয়। পাঁচ দিন পর এক নবজাতকের মৃত্যু হয়।

আরেক নবজাতকের চিকিৎসা চলে এনআইসিইউতে। ১৮ দিন পর শুক্রবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আল আমিনকে জানায়, হাসপাতালের ১ লাখ ৮২ লাখ টাকা বিল হয়েছে। টাকা পরিশোধ করে নবজাতক ফেরত নিতে হবে। এর আগেও কয়েক দফায় টাকার জন্য চাপ দেয়া হয়। নবজাতকের মরদেহ নেয়ার সময়েও টাকার চাপ দেয়া হয়।

আল আমিন বলেন, ‘আমার এক সন্তানকে ভুলভাল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে, এরপর প্রয়োজনের অতিরিক্ত এনআইসিইউতে রেখেছে। আমাদের ঠিকমতো সেখানে যেতেও দেয়নি, দেখতেও দেয়নি। লাখ লাখ টাকা বিল এসেছে বলে চাপ দেয়। এমনকি বলে টাকা না দিলে নবজাতক ফেরত দেবে না।’

আল আমিন আরও বলেন, ‘৪ মার্চ ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে প্রথমে নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে যাই। চিকিৎসকেরা এখনই সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে হবে বলে জানায়। ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত ডেলটা হেলথ কেয়ার হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলে; মিলন নামে এক ব্যক্তির নম্বরও দেয়। মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডেলটা হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসকেরা নবজাতক দুটিকে এনআইসিইউতে রাখার জন্য বলে; ডিসকাউন্ট করিয়ে দেবে বলে আশ্বস্ত করে দালাল মিলন। কিন্তু এত দিন রাখতে হবে আর এত টাকা লাগবে সে কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়নি। আমি জানলে প্রথমেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতাম। মিলন আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।’

এরপর দরিদ্র বাবা কিছু টাকা নগদে শোধ করে বাকিটা চেক বন্ধক রেখে ২ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও ক্ষেপে যায়। তিনি বলেন, আমার কাছে এত টাকা না থাকায় আমি চেক দিয়ে বলেছিলাম আমাকে ২ মাস সময় দিতে। তারা আমাকে জানিয়েছে, তারা চেক নেয় না। তাদের নগদ টাকা লাগবে।

গণমাধ্যমের সামনেই ভুক্তভোগী বাবাকে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার বলেন, মামার বাড়ির আবদার? নাকি এটা আপনার শ্বশুরবাড়ির নাকি ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান? আপনি গার্মেন্টসে চাকরি করেন, ফিডার দিয়া দুধ খান? চেক আমরা নেই না। আমার কাছে ইতোমধ্যেই ১০টা চেক আছে, আপনারা দেখবেন? পরে গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগীর দেয়া প্রস্তাবে রাজি হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ১৭ দিন পরে নিজ সন্তানকে নিয়ে ঘরে ফেরেন বাবা।

এমআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর