মামলার চাপে সম্পত্তি হারানোর শঙ্কা ডোনাল্ড ট্রাম্পের
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক মামলায় জর্জরিত প্রার্থী হিসেবে তাকে বিশাল অংকের জরিমানা দিতে হচ্ছে। জরিমানার অর্থ সংগ্রহ করতে না পারলে সম্পত্তিও হারাতে পারেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতি সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে।
জানা যায়, স্থানীয় সময় আগামী সোমবারের মধ্যে আদালতে প্রায় ৫০ কোটি ডলার অংকের বন্ড পেশ করতে না পারলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তির একাংশ জব্দ করা হতে পারে। ফলে মরিয়া হয়ে সেই বিশাল অংক জোগাড় করার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প।
নিউ ইয়র্কের এক আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার ছেলেদের ও তার কোম্পানির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ মেনে নিয়ে রায় দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সম্পদের প্রকৃত মূল্য গোপন করে তারা একাধিক ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা করেছেন। ট্রাম্প সেই রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও আপাতত তাকে জরিমানার গ্যারেন্টি হিসেবে সোমবারের মধ্যে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের বন্ড জমা দিতে হবে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা প্রায় ৩০টি বিমা ও বন্ড কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেও প্রয়োজনীয় অংকের বন্ড আদায় করতে পারছেন না। ট্রাম্পের সম্পত্তি বন্ধক রেখে তারা সেই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নয়। অন্যান্য ঋণ পেতে ট্রাম্প আগেই কিছু সম্পত্তি বন্ধক রাখার কারণেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন ফেডারেল কৌঁসুলি অ্যান্ড্রু ওয়াইসম্যান। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি সে কথা বলেন।
এদিকে, সোমবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় বন্ড জোগাড় করতে না পারলে ট্রাম্প অপমান ও মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে একাধিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। একমাত্র অন্য আদালত বা নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল হস্তক্ষেপ করলে হাতে তিনি কিছুটা বাড়তি সময় পেতে পারেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজে আদালতের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করছেন। তাকে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে জলের দরে সম্পত্তি বন্ধক বা বিক্রি করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি এমনকি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জয় হলেও সেই সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত মাসে ট্রাম্পকে দশ কোটি ডলার অংকের বন্ড জমা দিয়ে আাপতত রেহাই পেতে আপিল করে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো ৯১টি মামলায় জর্জরিত হলেও দমে যেতে প্রস্তুত নন। নিজের সংকট থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে তিনি সমর্থকদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনে তার পথে বাধা সৃষ্টি করতেই এত মামলা করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধেও তিনি বিষাদগার করে চলেছেন। তবে, রিপাবলিকান দলের রাশ নিজের হাতে তুলে নিয়েও ট্রাম্প সুবিধা করতে পারছেন না। দলের জাতীয় কমিটির সঙ্গে ফান্ডরেইজিং চুক্তির আওতায় প্রচার অভিযানের জন্য চাঁদা তোলা এবং এক রাজনৈতিক কমিটির মাধ্যমে মামলার ব্যয় জোগাড় করার বন্দোবস্ত করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু প্রথা ভেঙে দলের প্রার্থীর আইনি ব্যয়ের জন্য চাঁদা তোলার উদ্যোগ রিপাবলিকান দলের দাতারা কীভাবে গ্রহণ করবেন সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
এমআর