সৃষ্টির প্রতিটি প্রাণীর সাথেই আমার প্রেম আছে- টুটুল
টুটুল খান, ক্লোজ-আপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ রিয়েলিটি শো-এর মাধ্যমে উঠে এসেছেন। সঙ্গীত নিয়ে রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্টে (ইউডা) বর্তমানে পড়াশোনা করছেন। এখানেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি, নজরুল, রবীন্দ্র এবং লোকগীতির দীক্ষা গ্রহণ করে চলেছেন শিক্ষকদের কাছে।
এই সময়ে যে কয়েকজন নিয়মিত স্টেজ শো এবং টেলিভিশনে গান করছেন জামালপুরের সন্তান টুটুল তাদের মধ্যে একজন।
সম্প্রতি দৈনিক সোনালী বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
সোনালী বার্তা: কেমন আছেন?
টুটুল: ঝাকড়া চুলে দোলা মেরে স্মিত হাসি দিয়ে, খুব ভালো আছি।
সোনালী বার্তা: এই মূহুর্তে কি নিয়ে ব্যস্ততা চলছে?
টুটুল: এবার রোজার ঈদে একটা টেলিফিল্মে প্লে-ব্যাক করেছি। আরও একক বেশ কয়েকটি গান রিলিজ হবে ঈদে। আমার নিজের স্টুডিওতে সেগুলোর কাজ করা হয়েছে। এছাড়া স্টুডিওতে অন্যদের কাজ করছি, আপাতত এই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি।
সোনালী বার্তা: ঈদে কয়টি মৌলিক গান আসছে?
টুটুল: সবকিছু মিলে চার/পাঁচটি গান আসতে পারে।
সোনালী বার্তা: সংসার পেতেছেন?
টুটুল: হো হো করে হাসি দিয়ে বলেন- সংসার নিয়েই তো চিন্তার মধ্যে আছি। দেখি কি হয়?
সোনালী বার্তা: কতগুলো প্রেম করেছেন?
টুটুল: কৌশলী উত্তর দিয়ে বলেন, প্রেম তো সার্বজনীন। জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। সৃষ্টির প্রতিটি প্রাণীর সাথেই আমার মানবিক বোধের জায়গা থেকে প্রেম আছে মনের মধ্যে। নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষের জন্য আলাদা নেই। তবে ভালো লাগা বা দুর্বলতা বিপরীত লিংঙ্গের প্রতি সেটা থাকা স্বাভাবিক নয় কি? আর প্রেম-ভালোবাসা হয়ে যায়। এক দেখাতেও অনেক কিছু ভালো লেগে যায়।
সোনালী বার্তা: শৈশবের ঈদ আর বড় হয়ে যাবার পর ঈদের আবেদনটা কেমন?
টুটুল: শৈশব/কৈশোরের ঈদের মতো আনন্দ এখন তো খুঁজে পাইনা। কৈশোরে ঈদ মানেই অধির আগ্রহ আর ভালো লাগা। এখন সময়ের সাথে সাথে সেই আবেদন পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন দায়িত্ব বেড়ে গেছে। তবে এটাও ভালো লাগে।
সোনালী বার্তা: কি দেখলে এখনো মন্দ লাগে?
টুটুল: মানুষের খারাপ অভ্যাস দেখলে খারাপ লাগে। দেখছি অনেকদিন হয়ে গেছে কিন্তু তার অভ্যাস পরিবর্তন হচ্ছে না, তখন এসব দেখলে খারাপ লাগে।
সোনালী বার্তা: জীবনের স্মরণীয় মূহুর্ত কি?
টুটুল: ছোটবেলা গান জানতাম কিন্তু করতাম না। একবার আমার প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শেফালি ম্যাডাম খুব আদর করে একদিন স্কুলের একটা অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠিয়ে দেন। আমি সে দিন দুইটা গান গেয়েছিলাম। গান শেষ করার পর মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে আমি এখন অনুভব করতে পারি যে মানুষ কতটা ভালোবেসেছিল সে দিন। এটা এখনো ভাবলে নস্টালজিক হয়ে যাই।
সোনালী বার্তা: ঈদের আগে একটা সময় ক্যাসেটের যুগ ছিল, সেই সময়ে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সবাই একটা বছর ধরে অপেক্ষা করতো, যুগের পরিক্রমায় সেই আবেদন এখন নেই। তারপরও কি সেই আবেদন এখনো নাড়া দেয়?
টুটুল: আগের মতো গান নিয়ে সেই আবেগ উচ্ছ্বাস নেই। এখনো যে কম গান হচ্ছে তা কিন্তু না। আগে দর্শক, শিল্পী অর্থাৎ একটা গানের জন্য সকলের উপচেপড়া দরদ দেখা যেতো বর্তমানে যা অনুপস্থিত। ফিফটি ফিফটি ভাগাভাগি হয়ে গেছে। একদিকে আনন্দ অন্যদিকে হতাশা রয়ে যায়।
সোনালী বার্তা: জীবনের স্মরণীয় দিন কোনটি?
টুটুল: ক্লোজ-আপ ওয়ান চলাকালীন সময়ে আমার জন্মদিন পালন করা হয়েছিল। আমি নিজেও জানতে পারেনি আমার জন্মদিন পালন হবে। ওইখানে আমাদের সিনিয়র শিল্পী যারা ছিলেন তারাসহ সকলেই জন্মোৎসব পালন করেন। এটা আমার জীবনে এখন পর্যন্ত স্মরণীয় দিন হিসেবে রয়ে গেছে।
সোনালী বার্তা: আপনার অনেকগুলো মৌলিক গান আছে তারমধ্যে সব চেয়ে প্রিয় কোনটা?
টুটুল: এবার ঈদেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে আমার প্রিয় একটা গান, সেটা হল এতো ভালোবেসে আমি পাইলাম না তোর মন।
সোনালী বার্তা: এতো জনপ্রিয়তা কিভাবে ধরে রেখেছেন?
টুটুল: জনপ্রিয় কি না জানিনা। তবে ভালো লাগে যখন কোন ভোক্তা/শ্রোতা তার আবেগ অনুভূতি সামনে এসে প্রকাশ করে। জীবনে এমন একটা পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলাম আমেরিকাতে। আমার এক ভক্ত এতোটাই অবাক করে দিয়েছিলেন আমাকে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমি ক্লোজ-আপ ওয়ান থেকে এ যাবত যত গান গেয়েছি সব মুখস্ত। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি আমার জন্য।