অসহায় মানুষের পাশে জুম-বাংলাদেশে

জুম বাংলাদেশ পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও ছিন্নমূল মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া একটা স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান।
অসহায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো যখন ঠিকমতো খেতে পায়না, নিষ্ঠুর পৃথিবীতে মাথা গোজার কোথাও আশ্রয় নেই, খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টি, ঝড়কে নিত্যসঙ্গী করে যারা মানবেতর জীবনযাপন করে, এই শহরের ফুটপাতই যাদের থাকার জায়গা, সেইসব অসহায়, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের নিকট জমিনের ফেরেস্তা হিসেবে দেখা দিয়েছেন কতিপয় ব্যক্তিবিশেষ। যাদের নিরলস পরিশ্রম ও উদ্যোগে এই রমজান মাসে অসহায় মানুষকে প্রতিদিন তারা নিয়ম করে সেহরি ও ইফতার দিচ্ছেন।
কারা এই সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক জানতে চাইলে জুম-বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি অনেক কর্মকর্তা, সাধারণ মানুষ সকলেই অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন সময় অবদান রেখে চলেন।
পঙ্গূ,বয়োবৃদ্ধ, নাবালক শিশু, অবলা নারী, কর্মহীন মানুষের অন্নদাতা হিসেবে কাজ করছে জুম-বাংলাদেশ।
গোটা রমজান মাস জুড়েই চলবে এই সংগঠনের কার্যক্রম ।
কথা প্রসঙ্গে আরও জানা যায় শুধু এই রমজান মাস জুড়েই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকেনা। অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে লেখাপড়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিদিন রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির মূলফটকে তিনশো মানুষের সেহরিও ইফতারের ব্যবস্থা চলছে। কয়েক জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে দিন-রাত ২৪ঘন্টা ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।খাবারের জন্য বাজার করা, রান্না করা, খাবার পরিবেশন সবকিছুই করে চলেছেন তারা। বৃহৎ কর্মযজ্ঞ শেষ হয় সেহরির পর গিয়ে।
দৈনিক সোনালী বার্তার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় স্বেচ্ছাসেবক রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষ হিসেবে নৈতিক দায়িত্ব আছে সমাজের প্রতিটি সৃষ্টি ও মানুষের প্রতি। নৈতিক স্খলন ঘটলে নিজেকে সৃষ্টির সেরা জীব দাবী করা অর্থহীন। নৈতিক দায়িত্ব ও কর্ত্যবের জায়গা থেকেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়াস।
তিনি আরও বলেন, রমজান আমাদের মুসলিমদের জন্য শিক্ষাস্বরুপ। ক্ষুধার্ত মানুষের খাবারের কষ্ট উপলব্ধি যাতে করতে পারি সেজন্যই শরিয়তের পাঁচটি মূল ইবাদতের একটি হল রোজা।আমি নিজে ক্ষুধার্ত থাকলে অন্য একজন ক্ষুধার্ত মানুষের কষ্ট বুঝতে পারবো। ইসলাম হল শান্তি ও সহমর্মিতা, সৌহার্দ্যপূর্ণ একটা ধর্মের নাম। এখানে কোন বৈষম্য নেই, বিদ্বেষ নেই, জাত্যভিমান নেই, কোন ছোট-বড় নেই।আল্লাহর সৃষ্টি সকলেই সমান, সকলের অধিকার সমান। আল্লাহকে পেতে হলে তার সৃষ্টিকে ভালোবাসা ব্যতীত কোন কিছু সম্ভব নয়। আর পারিবারিক শিক্ষাটাও আমাকে এভাবেই গড়ে তুলেছে।সমাজের অন্য ধর্মের মানুষ যাতে বিন্দু মাত্র আমার আচার আচরণে ব্যথিত না হয় সেটা মেনে চলাও ইসলামের নীতি। এটাও অন্যতম একটা ইবাদত।
রফিক আরও বলেন, সময়ের পরিক্রমায় আমাদের এই কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করি। বেশি মানুষের জন্য আয়োজন করতে পারলে আরও ভালো লাগতো বলেও জানান তিনি।