বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন

ভারতেও ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / ১৯৮ Time View
Update : রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪

মোদী সরকার বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের ব্যানারে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে ভারতের বিরোধীদলগুলো। দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীসহ অন্য নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রতিদিন নির্বাচন নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছেন। আর এক্ষেত্রে রাহুল গান্ধী তার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ‘ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)’-কে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। তার দাবি, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইভিএমের কারসাজির জোরেই ক্ষমতায় টিকে আছেন। রাহুলের সুরে সুর মিলিয়েছেন ভারতের অন্য বিরোধী দলের নেতারাও।

ইভিএম নিয়ে রাহুল ও বিরোধীদের অভিযোগ হলো- মেশিনগুলো হ্যাক করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ভারতের ওপর তার নির্বাচনী আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়; যদিও একাধিক জনমত জরিপে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন অংশের ভোটারদের মধ্যে বিজেপি বেশ পছন্দের দল।

এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলো এর আগেও ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন মেশিনে যে চিপ ব্যবহার করা হয়, এনিয়েও তাদের অভিযোগ রয়েছে।

বিরোধীরা বলছে, ভোটাররা মেশিনের যে বাটনে চাপ দিয়ে তাদের ভোট দিচ্ছেন, তা রেকর্ড হচ্ছে না। আগে থেকেই মেশিনে কারসাজি করার কারণে এমনটা হয়। তবে ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) ও সুপ্রিম কোর্টও এই অভিযোগগুলো নাকচ করেছে। আর এখন পর্যন্ত দাবিগুলো প্রমাণ করার মতো কোনও স্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি।

কিন্তু ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া সাত ধাপের জাতীয় নির্বাচনের আগে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। রাহুল গান্ধী এখন লং মার্চে রয়েছেন। সেখানে থেকে তিনি নব্বইয়ের দশকে নির্বাচনে ব্যবহৃত কাগজের ব্যালটে ফিরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। অবশ্য এই দাবি গত সপ্তাহেই প্রত্যাখ্যান করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচন কমিশন একে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ প্রস্তাব বলে নাকচও করে। তবুও বিরোধীরা তাদের দাবি থেকে সরে আসছে না।

তবে মজার বিষয় হলো – দেশের অর্ধেক রাজ্যে সরকার গঠন করেছে বিরোধী দলগুলো। সেখানে কিন্তু তারা ইভিএমে নির্বাচন করেই ক্ষমতায় বসেছে।

এদিকে ইভিএমের প্রতি আস্থা ফেরাতে ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশন ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপ্যাট) চালু করেছিল। এটি হলো একটি কাগজের স্লিপ, যা ভোটাররা ভোট দেওয়ার পর ৭ সেকেন্ডের জন্য দেখতে পান।

এরপর এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে একটি সিলড বাক্সে পড়ে। এই স্লিপে ভোটারের ভোটের ক্রমিক নম্বর, প্রার্থীর নাম ও প্রতীক থাকে। একজন ভোটার কাগজের স্লিপটি দেখে নিশ্চিত হতে পারেন যে তার ভোট সঠিকভাবে রেকর্ড করা হয়েছে।

২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার কিছু নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে ভিভিপ্যাট স্লিপের ভোট গণনা করা হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ইভিএমের ফলের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপের তালিকা মিলছে কি না, তা যাচাই করা হবে।

এখন কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলো দেশের সব ভোটকেন্দ্রে ভিভিপ্যাট স্লিপের ভোট গণনার দাবি জানাচ্ছে। অভিজ্ঞ নির্বাচন কর্মকর্তা ও স্বাধীন বিশ্লেষকরা বলছেন, বিরোধী দলগুলো এভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভুল করছে।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরাইশি বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে ‘ইভিএমের মাধ্যমে’ কোনও নির্বাচনী জালিয়াতি সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে পুনরায় বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ভিভিপিএটি স্লিপ গণনার পক্ষে তিনি।

তিনি বলেন, ইভিএমের সঙ্গে মিলিয়ে ভিভিপ্যাট স্লিপ গুনতে যদি বেশি দিন সময়ও লাগে, তবুও এটি করা উচিৎ। নির্বাচনী কারসাজি ভোটদানের আগেই ঘটে। ভোটদানের দিন কারসাজি ঘটার সম্ভাবনা কম।

সূত্র-আল জাজিরা

এমআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর