সংসদে সরকারি চাকুরির বয়স বাড়ানো নিয়ে যা বললেন মন্ত্রী
সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়টি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয় বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আরো আলাপ আলোচনা করবেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোন সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। আগামীতে বাড়াবো কী, বাড়াবো না। বাড়ালে ভালো হবে কী না? এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। বিষয়টি আরো আলোচনা পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে দেখবো। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। এর আগে সম্পূরক প্রশ্নের চাদঁপুর-৫ আসনের রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও সংরক্ষিত আসনের এমপি ফরিদা ইয়াসমিন চাকুরির বয়সসীমা বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে কা না তা জানতে চান।
রফিকুল ইসলাম তার প্রশ্নে বলেন, সরকারি চাকুরিতে যোগদানের যে বয়সসীমা রয়েছে তা অনেক আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেশের মানুষের আয়ুষ্কাল ৬২ বছর থেকে ৭২ বছরে এসে পৌঁছেছে। এখন এটা অত্যন্ত যৌক্তিক হবে সরকারি চাকুরিতে যোগদানের যে বয়সসীমা শিথিল করে অন্তত: ৩৫ বছরের কাছে নিয়ে যান। এটা হলে কর্মসংস্থানের অভাবে আমাদের হতাশাগ্রস্ত তরুণ ও যুবক সমাজ প্রতিযোগিতায় এসে সরকারি চাকুরিতে ঢুকতে পারবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো বয়সসীমা শিথিল করার সময় এসেছে। সরকারি চাকুরিতে যোগ দেয়ার সুযোগ সৃষ্টির সময় হয়েছে। আমাদের যে ‘না’ একটা মনোভাব এর থেকে বেরিয়ে এসে ‘হ্যাঁ’-তে চলে আসতে হবে।
জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চাকরির বয়স ছিলো ২৭ বছর সেখান থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছরে উর্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তাদের জন্য সেটা ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে। আমরা সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সাথে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি।
চাকুরিতে প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার (অবসর) বয়সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন এখানে একটি শৃঙ্খলা…। সরকারি চাকুরিতে এখন বেশ আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করছেন। সরকারি চাকুরির পরিবেশ থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো নতুন প্রজন্মের কাছে বড় আকর্ষণ তৈরি করেছে। সরকারের কাজের সাথে সম্পৃক্ততা একটি সম্মানের বিষয়। আবার চাকরির নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো সেটিও অত্যন্ত সুন্দর ও কাজের পরিবেশও সুন্দর হয়েছে।
বয়স বাড়ানো প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের এটি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা সবসময় বলি ফ্রেশ গ্রাজুয়েট যারা তাদের রিক্রুট করতে চাই। এটা সরকারের একটা পলিসি। আমরা বিসিএস এর মাধ্যমে দেখে থাকি ২২/২৩ বছর বয়স থেকেই তারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। তারা ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এজন্য তারা যোগদানের যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি সংসদে জানিয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় যুগের প্রয়োজনে নতুন যেটা করলে ভালো হবে সেটা চিন্তা ভাবনা করে থাকি। তবে মনে করি এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। আমরা চাকুরির বয়স- আগামীতে বাড়াবো কী বাড়াবো না। বাড়ালে ভালো হবে কী না? এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা নিয়ে ভবিষ্যতে আরো আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।