নেচেগেয়ে বিদায় নিলেন মার্কো রয়েস
সমর্থকদের মন ভেঙে যাওয়ার মতো একটি খবর রয়েস দিয়েছেন কদিন আগে। যে ক্লাবের একাডেমিতে তিনি পা রেখেছিলেন ৭ বছর বয়সে, যে ক্লাবে ১২ বছর আগে তিনি পথচলা শুরু করেছিলেন নতুন করে, গত এক যুগে অসাধারণ পারফর্ম করে তিনি যেখানে হয়ে উঠেছেন সমর্থকদের মধ্যমণি, অনেক ক্লাবের হাতছানি উপেক্ষা করেও যে প্রাঙ্গনে রয়ে যাওয়ায় তিনি হয়ে উঠেছেন ক্লাবের প্রতীক, সেই প্রিয় ক্লাব আর প্রাণের আঙিনা ছেড়ে যাবেন তিনি এই মৌসুম শেষেই।
মৌসুমটা ঘরোয়া ফুটবলে ভালো কাটেনি ডর্টমুন্ডের। গত মৌসুমে শেষ দিন পর্যন্ত বুন্ডেসলিগার শিরোপা লড়াইয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত গোল পার্থক্যে বায়ার্ন মিউনিখের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল তারা। কিন্তু এবার শিরোপা লড়াই থেকেই তারা ছিটকে পড়ে বেশ আগে।
কিন্তু রয়েসের মতো একজন নায়কের বিদায়টা এমন বিবর্ণ হলে কেমন হয়! চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভাবনীয় পথচলায় তারা পৌঁছে গেল ফাইনালে।
এই ক্লাবে আসার পর প্রথম মৌসুমেই এই স্বাদ পেয়েছিলেন রয়েস। ২০১২-১৩ চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও তারা ফাইনালে উঠেছিলেন। তবে সেবার ফাইনালে তারা হেরে যান জার্মান প্রতিদ্বন্দ্বী বায়ার্ন মিউনিখের কাছে।
এরপর আর ফাইনালের মুখ দেখেনি ডর্টমুন্ড। বুন্ডেসলিগার বায়ার্নের অপ্রতিরোধ্য পথচলাও থামাতে পারেনি এই দীর্ঘ সময়ে। রয়েসের ক্যারিয়ারে তাই ঘরোয়া লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা নেই এখনও।
এবার ডর্টমুন্ড ক্যারিয়ারের শেষ প্রহরে এসে আবার ইউরোপ সেরার মঞ্চে উঠতে পেরে রয়েসের নিজেরই যেন বিশ্বাস হচ্ছে না।
অবিশ্বাস্য… ১০ বছরের বেশি সময় পর বরুশিয়ার হয়ে আবারও ফাইনালে আমি..
সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জয়ের পর মঙ্গলবার দ্বিতীয় লেগে পিএসজির মাঠে তারা জয় পায় একই ব্যবধানে। এ দিন অবশ্য পিএসজির আক্রমণের স্রোত সামলাতে প্রবল বেগ পেতে হয় তাদের। ৭০ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে পিএসজি, গোলে শট নেয় ৩০টি। এ দিন ৪টিসহ দুই লেগ মিলিয়ে প্যারিসের দলটির ছয়টি শট লাগে পোস্ট আর ক্রসবারে।
তবে ম্যাচ জয়ের পর এসবকে গোনায় ধরছেন না রয়েস। গোল করা ও ম্যাচ জিততে পারাই দিনশেষে তার কাছে সবকিছুর ওপরে।
আগামীকাল কেউ জিজ্ঞেস করবে না, আমরা কীভাবে জিতেছি। ওদের শট পোস্টে লেগেছে, কে কেমন খেলেছে, এসবের কোনো মূল্য কালকে থাকবে না। যেটা কেবল রয়ে যাবে, তা হলো বরুশিয়া ডর্টমুন্ড আবার ফাইনালে!
আজকে এটা পরিষ্কার ছিল যে, আমাদের ভুগতে হবেই এবং আমরা তৈরি ছিলাম। কিছুটা ভাগ্যের সহায়তাও আমাদের ছিল, শেষ পর্যন্ত ছেলেরা যা করেছে তা স্রেফ পাগলাটে খ্যাপাটে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ