রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান ৮মে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গেলে, সেখানে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য আপনার পদমর্যাদা ব্যবহার করুন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
ট্রেভেলিয়ান কক্সবাজার ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের বিষয়গুলো উত্থাপন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ক্যাম্পে মানুষের ভিড় অনেক বেশি হওয়ায় সেখানে এসব সুবিধা নিশ্চিত করা অসম্ভব।
তবে তিনি বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ঘর নির্মাণ করেছে। ভাসানচরে এসব সুযোগ-সুবিধার মধ্যে আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনকে বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি পারস্পরিক সুবিধার জন্য সেখানে সরাসরি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে স্থাপিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্রিটেনকে জায়গা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই কেউ অবৈধভাবে বিদেশে না যাক এবং আমরা এ লক্ষ্যে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি।
উভয় দেশেরই এ মাসে অবৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও ফেরত পাঠানোর জন্য এসওপিতে স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শিগগির এসওপিতে স্বাক্ষর করার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসনকে যুক্তরাজ্যের জন্য একটি সমস্যা উল্লেখ করে ট্রেভেলিয়ান বলেন, যুক্তরাজ্য আইনি অভিবাসনকে স্বাগত জানায়।
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, তারা যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে চান।
জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের প্রশংসা করেন। কারণ যুক্তরাজ্যই একমাত্র দেশ, যারা প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষয়ক্ষতি তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
ব্রিটেনে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্রিটেনের সঙ্গে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) স্বাক্ষর করতে পারে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, অন্যান্য উন্নত দেশ এ ব্যাপারে খুব কমই করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য গত বছর জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ব্রিটেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে।
এয়ারবাস ক্রয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পর্যায়ক্রমে ১০টি এয়ারবাস ক্রয় করবে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও অভিবাসন অংশীদারত্ব জোরদার করতে ট্রেভেলিয়ান দুদিনের সফরে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় আসেন।
সোনালী বার্তা/এমএইচ