বিদ্যালয়ে আটকা পড়ে কান্না করতে থাকে রাফিন, কেউ শুনেনি তার ডাক
বৃহস্পতিবার মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের ৯নম্বর পাঁচখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটে এই ঘটনা। পরে অসুস্থ অবস্থায় শিক্ষার্থী রাফিন হোসেনকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে।
রাফিন একই এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে। গতকাল শুক্রবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
একাধিক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে সহপাঠীদের সঙ্গে বিদ্যালয়ে যায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের টয়লেটে যায় সে। শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা থাকার কারণে সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যায়। ছুটির ঘণ্টা পড়লে শ্রেণিকক্ষে থাকা সবাই বাড়িতে চলে যায়। পরে বিদ্যালয়ের দফতরি খোকন খান শ্রেণিকক্ষ ও টয়লেটের দরজা তালাবদ্ধ করে চলে যান।
পরে চিৎকার শুরু করে রাফিন। কিন্তু সেই ডাক শুনতে পায়নি কেউ।
রাফিন দুপুরের পর বাড়িতে না গেলে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়া এক পথচারী শিশুটির কান্নাকাটি শুনে কাছে ছুটে যান। পরে টয়লেটের ভেতর শিশুটি আটকা পড়েছে বুঝতে পেরে তালা ভেঙ্গে রাফিনকে উদ্ধার করেন তিনি। গুরুতর অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয় জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে।
পাঁচখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। এই ঘটনা কেউ ইচ্ছাকৃত করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, কেন এমন ঘটনা ঘটেছে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। এই ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটি শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
মাদারীপুর জেলা শিশু একাডেমির কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এমন ঘটনা চলচ্চিত্রের মতো। বিষয়টি দুঃখজনক ও কষ্টদায়ক। এই ঘটনার দায় প্রধান শিক্ষক, দফতরি কেউই এড়াতে পারেন না। তাদের সবার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি নিয়মিত মামলা হওয়া উচিত।’
এমএইচ