চুরির অপবাদে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ দিয়ে ২ শিশুকে নির্যাতন
লালমনিরহাটে সুপারি চুরির অপবাদে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে আসিফ (৮) ও শরিফুল (৯) নামে দুই শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সাগর নামে এক স্ট্যাম্প বিক্রেতার বিরুদ্ধে।
গতকাল শনিবার দুপুরে এ ঘটনায় বিচার চেয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
এর আগে শুক্রবার (১৭ মে) রাতে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের ওকড়াবাড়ির খামারবাড়ি এলাকায়।
নির্যাতিত শিশু আসিফ ওই এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে ও শরিফুল একই এলাকার আমিনুর ইসলামের ছেলে। তারা দুইজনেই হারাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্র।
অভিযুক্ত সাগর ভেন্ডার ওই এলাকার মৃত-আইয়ুব আলী ভেন্ডারের ছেলে।
অভিযোগে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলের দিকে শিশু আসিফ ও শরিফুল ওকড়াবাড়ি বাজার সংলগ্ন তাদের নিজ এলাকায় খেলা করছিল। এ সময় ওই এলাকার স্ট্যাম্প বিক্রেতা সাগর সুকৌশলে তাদের একটি ভুট্টা ক্ষেতের ভেতরে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের দুজনকে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সাগর ওই শিশুদের তার নিজ বাড়িতে নিয়ে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। হাতে পায়ে ধরলেও ক্ষান্ত হয়নি সাগর। অবশেষে শিশুরা অজ্ঞান হয়ে পড়লে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান সাগর।
পরে স্থানীয়রা শুক্রবার রাতে আহত দুই শিশুকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আহত শিশু আসিফের মা আছমা বেগম বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
হাসপাতালের বেডে শিশু আসিফ সাংবাদিকদের বলে, হাত-পা ও মুখ বেঁধে আমাদের দুই দফায় লাঠি দিয়ে মারপিট করেছে সাগর ভেন্ডার। আমাদের গলায় ছুরি ধরে আমরা সুপারি চুরি করেছি স্বীকার করতে বাধ্য করে। কিন্তু আমরা তো চুরি করি নাই। আমরা চুরির ব্যাপারে কোনো কিছুই জানি না।
আসিফের মা আছমা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, এই লম্পট সাগর মানুষ নয় তাকে পশু বললেও ভুল বলা হবে। সে একটা পশুর চেয়েও অধম। মাদক সেবন করে আমার সন্তানকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে।
অভিযুক্ত সাগরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে ফোন কেটে দেন।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএইচ