নির্জন কারাগারে বসে প্রধান বিচারপতিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি

নিজে তিনদিন শুনানি করে নিজেকে খালাস করতে না পারলে গলায় ফাঁসির দড়ি নিতে প্রস্তুত বলেও জানান ওই আসামি। মাদক মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস খুলনা জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন।
জানা গেছে, খুলনা জেলা কারাগার থেকে স্ত্রী রিমা বিশ্বাসের মাধ্যমে এ চিঠিটি বিভিন্ন দফতরে পাঠিয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস। চিঠিটি প্রধান বিচারপতির ওবায়দুল হাসানের কাছেও পাঠানোর কথা জানিয়েছেন তার স্ত্রী। ৬ পৃষ্ঠার চিঠিতে ঘুরে ফিরে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেছেন তিনি। ৩ দিনে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারলে ফাঁসি বরণ করে নিতে প্রস্তুত বলেও জানান কয়েদি বিকাশ।
সম্প্রতি বিভিন্ন দফতরে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী রিমা বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘কোর্ট থেকে জজ গিয়েছিলেন। তার কাছে আমার স্বামী সবকিছু খুলে বলেছেন। তিনি বলেছেন, ঠিক আছে তুমি যদি এমনটা করতে চাও, তাহলে করতে পারো। জেলখানা থেকেও অনুমতি নেয়া কথা জানান তিনি।
রিমা বিশ্বাস আরও বলেন, ‘আমার স্বামী এ মামলায় জড়িত না সেটাই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। তিনি এতে জড়িত না বলেই তিনদিনে প্রমাণ করতে চেয়েছেন। তিনি অন্যায় করলেতো তিনদিনে সেটা প্রমাণ করতে চাইতেন না।’
কারাগারে মৃত্যুযন্ত্রণায় ভোগা স্বামীর এমন মানবিক আবেদন গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়ে রিমা বিশ্বাস বলেন, ‘আমার স্বামী যদি কিছু করতো তাহলে মনেরে বুঝ দিতাম, অন্যায় করেছে তাই শাস্তি পাচ্ছে। কিন্তু তিনি নির্দোষ এটাই দুঃখ।
আসামি নিজেকে নির্দোষ দাবি করবে এটিই স্বাভাবিক। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিকাশের এমন চ্যালেঞ্জ কি গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই?
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, একান্তই যদি মানবিক কিছু থাকে। তাহলে সেটা প্রধান বিচারপতির কাছে দিয়ে দেন। তিনি যদি বিশেষভাবে কোনো বেঞ্চকে মামলা ফিক্স করে দেন, সেখানে যদি হেয়ারিং হয় এবং উনি যদি কোনো আইনজীবীকে অনুমতি দেন তাহলে মামলা পর্যালোচনা করা যেতে পারে। হেয়ারিংয়ের পর বোঝা যাবে, যে আইন এবং ঘটনা এ দুটোর যে সম্পৃক্ততা আছে সেটার মাধ্যমে তিনি আদৌই খালাস পাবেন কি পাবেন না।
জেলখানা থেকে পাঠানো চিঠিতে কারাগারের সিল রয়েছে। যদিও চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। মাদক মামলায় ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড হয় বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের।
সোনালী বার্তা/এমএইচ