আমরা তাকে প্রোটেকশন দিতে যাবো কেন? প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি জব্দের বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণলায়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন, দুদক স্বাধীন। সেখানে যদি অপরাধী হিসাবে সাব্যস্থ হয় কেউ, আমরা তাকে প্রোটেকশন দিতে যাবো কেন?
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিষয়টি দেখতে হবে অপরাধ এবং ব্যক্তি যত প্রভাবশালী হোক, অপরাধ করতে পারে, অপকর্ম করতে পারে। কথা হচ্ছে যে, প্রশ্ন থেকে যায় এই ব্যাপারে তাদেরকে অপকর্ম অপরাধের শাস্তি পাওয়ার ব্যাপারে সরকার সৎ সাহস দেখিয়েছে কিনা?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অপরাধীদের শাস্তি দিতে শেখ হাসিনা সরকারের সেই সৎসাহস আছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন, দুদক স্বাধীন। সেখানে যদি অপরাধী হিসাবে সাব্যস্থ হয় কেউ, আমরা তাকে প্রোটেকশন দিতে যাবো কেন? তিনি সাবেক আইজিপি হোন আর সাবেক সেনাপ্রধান হোন। আমাদের দেশের প্রচলিত আইন তাদের শাস্তির কাছে সমর্পন করবে। এ কারনে কোন প্রকার সরকারের কাউকে প্রোটেকশন দেওয়ার বিষয় নেই। শেখ হাসিনা ও তার সরকার এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। অপরাধী যত প্রভাবশালী হোন অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতে হবে।
তিনি বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকান্ডে যাদের দণ্ড হয়েছে তারা অধিকাংশ নয়, সবাই ছাত্রলীগের। কিন্তু সরকার তাদের প্রোটেকশন দিতে যায়নি। এমনকি বিশ্বজিৎতের হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছে। সেখানেও সরকার কোনো প্রোটেকশন দেয়নি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরর সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল তো প্রতিদিন অনেক কথা বলেন। তাঁর মানুষিক ট্রমা মনে হয় ভয়ংকর পর্যায়ে উপনিত হয়েছে। তিনি এবং বিএনপির নেতারা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছে। তারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে ব্যর্থ, সরকার ঠেকানোর আন্দোলনে। এখন তাদের এদিকও নাই, ওদিকও নাই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা অর্জন করেছে, দখল করেনি।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বন্ধুরাও আগের মতো এসে তাদের উৎসাহিত করে না। আগে তো সকালে ঘুম থেকে উঠে মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে হাজির হতেন, নাস্তা করার জন্য। সেখানেই নাস্তা করতেন। রাতেও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না, কোথায়? মার্কিন দূতাবাসে। সেখানে বিদেশি বন্ধুরা তাদের ক্ষমতায় বসাবে। সেই স্বপ্নের খড়কুটো উবে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে সাবেক সংসদ সদস্য মানু মজুমদার মরদেহ দলীয় কার্যালয়ের সামনে আনা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মানু মজুমদারের মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াত এই নেতার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মানু মজুমদার প্রচার বিমুখ মানুষ ছিলেন। তার বড় পরিচয় হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে যারা প্রতিরোধ যোদ্ধা ছিলেন সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। একাধারে ১৩ বছর কারাগারে ছিলেন। মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল কিন্তু বয়স বিবেচনায় তাকে যাবৎজীবন দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল ও সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সায়েম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।
সোনালী বার্তা/ এমএইচ