সাবেক স্ত্রীকে হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সাবেক স্ত্রী মিতু আক্তার (২১) হত্যা মামলায় হযরত আলী (৩০) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া অপর ধারায় ওই আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ডও দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সাহেদুল করিম এই রায় দেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মিতু আক্তার উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হযরত আলী একই উপজেলার কীর্তনখোলা গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মিতু আক্তারের সঙ্গে বিগত ২০১৩ সালে হযরত আলীর মোবাইল ফোনে পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক হয়।
ওই বছরই উভয়ে নিজ ইচ্ছায় হাজীগঞ্জে কাজী অফিসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
এরপর শ্বশুরালয়ে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন মিতু; যার ফলে ২০১৬ সালের ২৫ জুন মিতু ও হযরত আলীর তালাক হয়। এর মধ্যে হযরত আলী প্রবাসে চলে যান এবং মিতুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখেন।
২০১৭ সালের জুন মাসে আবার দেশে ফিরে আসেন এবং পরের মাসের ২৩ জুলাই মিতুকে নিয়ে চাঁদপুর শহরে ঘুরতে যান। ঘুরাঘুরি শেষে মিতু বাড়ি ফিরে যায়। ওই দিন রাতেই হযরত আলী ও তার বন্ধুরা মিতুদের বাড়িতে খেতে যাবেন বলে জানান।
রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে হযরত আলী মিতুকে বন্ধুদের তাদের বাড়ির সামনে থেকে নিয়ে যেতে বলেন। মিতু এগিয়ে তাদের নিতে গিয়েই হত্যার শিকার হন। পরে মিতুর মা রাবেয়া বেগম মেয়ের খুজতে বের হন। এরপর তিনি পুকুর পাড়ে মিতুর গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান।
তার ডাকচিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মিতুর মা রাবেয়া বেগম পরদিন ২৪ জুলাই হযরত আলীকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামি হযরত আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
মামলাটি থানা আমলে নিয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন তৎকালীন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিনকে। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি।
এ মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, মামলাটি প্রায় ৭ বছর চলার সময় আদালত ১৯ জনের সাক্ষ্য নেন। আসামির অপরাধ স্বীকার এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক আজ এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর ও ইয়াসিন ইকরাম।
সোনালী বার্তা/এমএইচ