সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন

রিয়াজের ১০ লাখ টাকা চাওয়ার ভিডিওটি উদ্দেশ্যমূলক: ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২২৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চেয়ে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, তা ছিলো সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক বলে প্রতিবেদন দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

গত ২৫ মে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ এ প্রতিবেদন দেয়। এর আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরিক্ষত মহিলা আসনের কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীর সঙ্গে ১০ লাখ টাকা চেয়ে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়, তার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে গত ১৪ মে রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশের ডিবি-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তদন্ত করে।

তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রিয়াজ সুনামের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য ও ২০, ১৯, ১৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীর একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ভাইরাল হয় যা দলীয় সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি হওয়ায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়। দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী রিয়াজ অব্যাহতি পত্র নিতে চামেলীকে তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে ম্যাসেজ দেন। পরে চামেলী জানান সন্ধ্যায় স্বশরীরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতরে এসে অব্যাহতিপত্র নিয়ে যাবেন। কিন্তু রহস্য জনক কারণে তিনি বাদীকে ফের ফোন করে জানতে চান, আগামীকাল সকালে আসবেন? ঠিক সেই সময় বাদী রাস্তায় চলন্ত গাড়িতে থাকায় তাকে বলেন, কথা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, এখন রাস্তায় গাড়ীতে, কথা বুঝা যাচ্ছে না, তাহলে কথা বাড়িয়ে লাভ নাই, ফোন রাখি। এই বলেই রিয়াজ তার ফোন নামিয়ে পকেটে রাখেন।

পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে রিয়াজ জানতে পারেন চামেলীর কাছে ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন এবং এই ধরনের জঘন্য মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে বাদীকে নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও করে।

এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রিয়াজের সঙ্গে কথা বলার সময় সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে লাউড স্পিকার দিয়ে অপর একটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও রেকর্ড করে। রিয়াজ যেহেতু দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী। সেই কারণেই তাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে গুজব নির্ভর অডিওটি প্রচার করে। Md Salauddin নামক ফেসবুক আইডি থেকে কার্যত ভিডিওটি বহুল প্রচার করা হয়। গুজব নির্ভর অডিওটির কারণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ গত ৩০ এপ্রিল বাদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেন এবং লিখিত জবাব দিতে বলেন।

বিষয়টি সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় ডিবি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন কর্তৃক তদন্তে সহায়তা করা জন্য আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিত্রে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহায়তার প্রদানের লক্ষে বর্ণিত Md Salauddin নামক ফেসবুক আইডি শনাক্ত করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে উক্ত ফেইসবুক আইডির ব্যবহারকারী মো. সালাউদ্দিন মিয়া এর বিষয়ে প্রকাশ্যে ও গোপনে খোজখবর নেন।

মো. সালাউদ্দিন মিয়া কে মোবাইল ফোনে তার অডিওটি পোষ্ট করার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি গত ১৬ মে ডিবি সাইবার ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগে হাজীর হয়ে এই মর্মে মুচলেকা দেন যে, মো. সালাউদ্দিন মিয়া অশিক্ষিত, মো. খাইরুজ্জামান ফারুক উক্ত ভিডিওটি মো. সালাউদ্দিন মিয়ার মোবাইল ফোন নিয়ে গত ২৬ এপ্রিল মো. সালাউদ্দিন মিয়ার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতে আপলোড করে।

মো. সালাউদ্দিন মিয়া কে কিছুক্ষণ পর ২০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খাইরুজ্জামান ফারুক তার মোবাইল ফোন দিয়ে দিলে মো. সালাউদ্দিন মিয়া ভিডিওটির অডিও তিনি নিজে দেখে শুনে পোষ্টের টাইটেলের সাথে অসংগতি দেখতে পাওয়ায় তৎক্ষণাৎ ভিডিওটি তার আইডি থেকে ডিলিট করে দেন। পোস্টের ভিডিওতে “টাকা লেনদেন না হলেই হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় বহিষ্কারের অব্যাহতি” টাকা নেওয়ার যে কথা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ ভিডিওর অডিওতে টাকা পয়সার কোন কথা উল্লেখ নেই।

মো. সালাউদ্দিন মিয়া অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত কাজ করা হতে সম্পূর্ণ বিরত থাকবেন বলে মুচলেকা দিয়েছেন। সুতরাং ফেসবুক আইডিতে আপলোডকৃত ভিডিওর অডিওটি পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, অডিওটিতে কোন প্রকার টাকা পয়সা লেনদেনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায় নাই।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ বলেন, কাজ করলে ষড়যন্ত্র হবেই। কিন্তু নোংরা ষড়যন্ত্র ভালো না। সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সন্মেলন হবে আমি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। এজন্য কিছু লোক ষড়যন্ত্র করে। খবর নিয়ে দেখেন তাদের রাজনীতি আমল নামা ভালো না।

এ ব্যাপারে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কয়েজন নেতা বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যে বেফাঁস মন্তব্য করেছে তা ঠিক হয় নাই।

গুজবে কান দিয়ে বিশেষ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যে অশালীন মন্তব্য করেছে তা নেতা কর্মীরা হতাশ হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনে নেত্রীকে যখন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে সে সময় রিয়াজের ভূমিকা ছিল প্রশংসীয়। দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতা রিয়াজ। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে কিন্তু প্রতিহিংসা থাকা ঠিক না।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর