হঠাৎ কেন এরদোয়ানকে সতর্ক করলেন পুতিন?

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েপ এরদোয়ানের বন্ধুত্বের জগৎজোড়া খ্যাতি রয়েছে। পুতিনের সঙ্গে এত মাখামাখির কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার প্রক্রিয়া থমকে যায় তুরস্কের।
কিন্তু তাতেও দমে যাননি এরদোয়ান। উল্টো রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর তুরস্ককে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় দেখা গেছে। তবে এবার নিজের ‘ভালো বন্ধু’ এরদোয়ানকে সতর্ক করে দিয়েছেন পুতিন।
ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর ব্যাপারে কারও আগ্রহ নেই। বরং আগুনে বাতাস দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এই যুদ্ধ এখন রাশিয়ার জন্য সম্মানের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমতাবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সতর্ক করেছেন পুতিন।গতকাল বুধবার তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়ার পরমাণু শক্তি বিষয়ক অংশীদারত্বের প্রশংসা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গাজা নিয়েও আঙ্কারার অবস্থানে পুতিন খুশি।
তবে তুরস্কের অর্থনীতি নিয়ে এরদোয়ানকে সতর্ক করে দিয়েছেন পুতিন। তার ভাষায়, তুরস্ক যদি আর্থিক সহায়তার জন্য পশ্চিমাদের দিকে হাত বাড়ায় তাহলে আখেরে আঙ্কারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ সময় পুতিন ইউক্রেনকে সহযোগিতা না করতে তুরস্কের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তুরস্কে যাওয়া গ্যাসের পাইপলাইনে ইউক্রেন হামলার চেষ্টা করছে বলেও সতর্ক করেন পুতিন।
ন্যাটোর সদস্য হয়েও রাশিয়া এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে তুরস্ক। গেল দুই বছরে তার বহু নজির স্থাপনও করেছে আঙ্কারা। এর আগে জাতিসংঘের সঙ্গে মিলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মাঝে কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছেন এরদোয়ান। ওই চুক্তির ফলেই ইউক্রেন বিভিন্ন দেশে তাদের শস্য রপ্তানি করতে পারছে। এখন সম্ভাব্য বিপদের ব্যাপারে বন্ধুকে সতর্ক করলেন পুতিন।
রাশিয়ার সেন্ট পিটারসবার্গে একটি অর্থনৈতিক সম্মেলনে পুতিন তুরস্কের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। সেখানেই পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে কিছু কিছু খাতে তুরস্কের সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু তুরস্কের গ্যাস পরিবহনের পাইপলাইনে হামলার চেষ্টা করছে ইউক্রেন। এটা বাড়তি কথা নয় উল্লেখ করে পুতিন জানান, নাশকতা চালাতে চাওয়া এমন দুটি ড্রোন জ্যাম করেছে রাশিয়ার ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম।
ইউক্রেন ছাড়াও পশ্চিমাদের নিয়ে তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছেন পুতিন। তিনি বলেন, আমার মনে হয়েছে তুরস্ক সরকারের ইকোনমিক ব্লক পশ্চিমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে, বিনিয়োগ করছে এবং অনুদান নিচ্ছে। এটা খারাপ কিছু না। কিন্তু এতে যদি রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্যিক এবং আর্থিক সম্পর্ক খারাপ হয়, তাহলে আঙ্কারা পাওয়ার চেয়ে হারাবে বেশি।
সোনালী বার্তা/এমএইচ