শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন

ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ

সিনিয়র প্রতিবেদক / ৯৬ Time View
Update : বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪

কোরবানির ঈদের টানা পাঁচ দিনের সরকারি ছুটি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে রাজধানীবাসী।

বুধবার (১৯ জুন) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও ট্রেন স্টেশনে মানুষের ভিড় চোখে পড়ছে।

কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে আজ থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা। ফলে কর্মস্থলে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় ফিরে আসছেন মানুষ।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এই স্টেশনে সকাল থেকেই ছিল যাত্রীর চাপ। সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে সারা দেশ থেকে আন্তঃজেলা ও লোকাল মিলে ২০টি ট্রেন এসেছে। সবগুলো ট্রেনই ছিল যাত্রীতে ভরপুর। ট্রেনে করে ঢাকায় পৌঁছে কিছুটা দেরিতে হলেও অফিসে যোগ দিয়েছেন অনেকে।

পর্যটক এক্সপ্রেসে করে চট্টগ্রাম থেকে সকালে কমলাপুর আসেন ব্যাংক কর্মকর্তা মনজুর হোসেন। তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা ছাড়াই এসেছি। এখন দ্রুত অফিসে যেতে হবে। পরিবারের লোকজনকে বাসার পথে গাড়িতে তুলে দিয়ে অফিসে করবো।

তিনি আরও বলেন, অনেক বছর পর লম্বা ছুটি কাটিয়েছি। পরিবারের সবার সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করেছি।

সকালে খুলনা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছায় সুন্দরবন এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে ছিল ঢাকা ফেরত মানুষের উপচেপড়া ভিড়। শফিক নামের এক এক যাত্রী বলেন, পরিবারের সঙ্গে থাকতে কার না ভালো লাগে। আরও দুই দিন সময় পেলে আরও ভালো লাগতো। তারপরও পাঁচ দিনের ছুটি কাটিয়ে ফিরলাম। বাসা হয়ে অফিসে যাবো।

সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরুনিমা হক বলেন, দুদিন পর থেকে আমাদের ক্যাম্পাস খোলা। কয়েকদিন পরেই পরীক্ষা শুরু হবে। তাই দ্রুত ঢাকায় ফিরেছি। গ্রামের বাড়িতে সবার সঙ্গে অনেক আনন্দ করে ঈদ উদযাপন করেছি।

আরেক যাত্রী তাজিন বলেন, ট্রেনে অনেক ভিড়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় দেরি হয়েছে। ১০টার ট্রেন সাড়ে ১১টার এসেছে। তারপরও নিরাপদে এসেছি, আলহামদুলিল্লাহ্।

কমলাপুর রেলস্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার থেকেই ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে নগরবাসী। তবে আজ মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষেরা ঢাকায় ফিরে কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন। আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঢাকায় ফেরা মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যস্ত হয়েছে স্বীকার করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, বিভিন্ন কারণে দু-একটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যস্ত হয়েছে। তবে কোনও ট্রেন বাতিল করা হয়নি। অধিকাংশ ট্রেন সময়মতো ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।

বুধবার দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, দূরপাল্লার প্রত্যেকটি বাসে করে ঈদে বাড়ি যাওয়া মানুষেরা ফিরছেন। উত্তরবঙ্গ থেকে আসা বেশিরভাগ মানুষ সাভার, হেমায়েতপুর, আমিন বাজার নেমে গেছেন বলে জানান শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আশফাক আহমেদ। তিনি বলেন, অনেক গাবতলী টার্মিনালে নামছেন। আজ ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের মাঝে চাকরিজীবী যেমন আছেন, তেমনি শিক্ষার্থী ও সীমিত আয়ের শ্রমজীবী মানুষদের সংখ্যা বেশি ছিল।

গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রী মানিক বাহার জানান, ঢাকায় ফিরতে রাস্তায় তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। বড় কোনও যানজটও লাগেনি। নির্বিঘ্নে বাস চালানোর কারণে যাত্রা স্বস্তির ছিল। তবে কিছু কিছু বাসে লোক দাঁড়িয়েও আসছেন বলে জানান তিনি।

গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরা শিক্ষার্থী শান্তনা বলেন, কোনও সমস্যা হয়নি রাস্তায়। গাড়ি টানা চলছিল। তবে আজ গরমটা বেশি। গ্রামেও গরম ছিল, তবে এতটা টের পাইনি।

বাস থেকে নেমেই যাত্রীদের সিনএনসি অটোরিকশা নিয়ে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা গেছে। সিএনসি অটোরিকশা এবং বিকশাচালকরা নাগালের বাইরে ভাড়া চাচ্ছেন। কেউ মিটারে যাত্রী নিচ্ছেন না তারা। রোদের গরমে অতিষ্ঠ যাত্রীরা বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে সকাল থেকেই প্রচুর মানুষ ঢাকায় ঢুকছেন জানিয়ে সিএনজিচালক মনির হোসেন বলেন, সকাল থেকে মহাখালী টার্মিনাল আর গাবতলীতে ছিলাম। ভালোই যাত্রী আসতে দেখলাম। ট্রিপও ভালো পাচ্ছি। এবার ঈদে বাড়ি যাইনি। ঈদের সময়ে দিনরাত কষ্ট করে গাড়ি চালিয়েছি। কিছু টাকা জমিয়েছি। ছেলে মেয়েদের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনেছি। সামনের শুক্রবার বাড়ি যাবো। দোয়া করবেন।

এমআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর