হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরাইলের আয়রন ডোম ব্যর্থ হতে পারে
লেবাননের ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যেকোনো সর্বাত্মক যুদ্ধে প্রথম আঘাতে বিপর্যস্ত হতে পারে ইসরাইলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এমনটিই আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিষয়ে তারা সতর্কতার কথাও জানিয়েছে।
ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনায় এই শঙ্কার কথা উঠে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের এক পর্যালোচনা অনুসারে, হিজবুল্লাহর রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র খুঁজে বের করে ধ্বংস করার জন্য বিশাল অনুসন্ধান ও হামলা প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। তাদের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে, যা মূলত চাপ প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে এবং ইসরাইলি জনবসতিতে দূরপাল্লার হামলা চালিয়ে যুদ্ধের প্রতি ইসরাইলি সমর্থন দুর্বল করার চেষ্টা করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হলো ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে হিমশিম অবস্থায় পতিত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা প্রতিহত করা।
সংস্থাটির বিশ্লেষক সেথ জি জোন্স বলেন, উত্তর দিক থেকে আসা বিস্তৃত রকেট ভাণ্ডার মোকাবিলা করা ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য একটি কঠিন কাজ হবে।
তার এই মন্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে পেন্টাগনের এক কর্মকর্তার সতর্কবার্তার।
বাইডেন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছিলেন, আমাদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, অন্তত কিছু আয়রন ডোম ব্যাটারি প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হবে।
সিএনএন আরও জানিয়েছিল, ইসরাইল উত্তরে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম মোতায়েন করছে।
হিজবুল্লাহর ক্রমবর্ধমান ড্রোনের ব্যবহার, বিশেষ করে আত্মঘাতী ড্রোনগুলো ইসরাইলের বিদ্যমান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইসরাইলের রাইখম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্টার-টেরোরিজম ইনস্টিটিউটের একটি তিন বছরব্যাপী গবেষণায় উঠে এসেছে, হিজবুল্লাহ দিনে প্রায় ৩ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে সক্ষম। যা তারা তিন সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে পারবে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের প্রধান লক্ষ্য হবে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা।
গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে গাজায় যুদ্ধ চলছে। ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার।
এ যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না করলে তারা ইসরাইলের ওপর হামলা চালিয়ে যাবে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ