অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপের সেরা একাদশে বাংলাদেশের রিশাদ
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ফাইনাল দিয়ে ঘণ্টা কয়েক পরেই পর্দা নামবে নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। তার আগে পুরো আসরে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সেরা একাদশ বেছে নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। যেখানে নিজ দেশের মাত্র দুজন সুযোগ পেয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা থাকলেও একাদশের নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে রশিদ খানকে।
দেখতে দেখতে শেষ হয়ে আসলো ক্রিকেট বিশ্বের চার-ছক্কার জমজমাট আসর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অন্যবারের তুলনায় এবার অবশ্য বোলাররাই বেশি দাপট দেখিয়েছে। ২ জুন ২০ দল নিয়ে যাত্রা করা আসরে টিকে আছে মাত্র দুই দল। শনিবার (২৯ জুন) রাতে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার শিরোপার লড়াই দিয়ে পর্দা নামবে নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। ফাইনাল মঞ্চস্থ হওয়ার আগেই আসরের সেরা একাদশ বেছে নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
ওপেনিংয়ে জায়গা পেয়েছেন ট্রাভিস হেড ও রোহিত শর্মা। বোলারদের স্বর্গরাজ্যেও আসরজুড়ে দুজনের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। ৭ ম্যাচে ৪২.৫০ গড় ও ১৫৮.৩৮ স্ট্রাইকরেটে ২৫৫ রান করেছেন হেড। আসরে তার ফিফটি দুটি, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ৭৬। যদিও তার দল এবার সুপার এইট পেরিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে পারেনি। অন্যদিকে নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে ভারতকে ফাইনালে তুলেছেন রোহিত। ৭ ম্যাচে ৪১.৩৩ গড় ও ১৫৫.৯৭ স্ট্রাইকরেটে ২৪৮ রান করেছেন তিনি। ফিফটি ৩, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ৯২ রানের।
ওয়ানডাউনে জায়গা পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটরক্ষ ব্যাটার নিকোলাস পুরান। ৭ ম্যাচে ৩৮ গড় ও ১৪৬.১৫ স্ট্রাইকরেটে তার রান ২২৮। আসরে এক ফিফটির মালিকের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৯৮ রান। সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে এ একাদশে জায়গা পেয়েছেন কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারন জোন্স। পাকিস্তানের মতো পরাশক্তিতে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ আসরেই সুপার এইট খেলেছে তার দেশ। সে ম্যাচে ২৬ বলে অপরাজিত ৩৬ রানের ইনিংসের পর সুপার ওভারে ৬ বলে ১১ রান করে দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ৬ ম্যাচে ৪০.৫০ গড় ও ১৩৫ স্ট্রাইকরেটে ১৬২ রান করে একাদশের চতুর্থ ব্যাটার তিনি। আসরে এক ফিফটির এ মালিকের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি অপরাজিত ৯৪ রানের।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পছন্দের একাদশে অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন মার্কাস স্টইনিস ও হার্দিক পান্ডিয়া। ৭ ম্যাচে ব্যাট হাতে ১৬৪.০৭ স্ট্রাইকরেটে ১৬৯ রান করেছেন স্টইনিস। যেখানে সর্বোচ্চ ৬৭ রানের ইনিংস খেলা অজি অলরাউন্ডারের ফিফটির সংখ্যা ২। বল হাতে ৮.৮৮ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১০ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ১৯ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ১৪৯.৪৬ স্ট্রাইকরেটে এক ফিফটির সহায়তায় ১৩৯ রান করেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৭.৭৭ ইকোনমিতে তার উইকেট সংখ্যা ৮। সেরা বোলিং ২৭ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট। ফাইনালে যেটা আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ থাকছে ভারতীয় এ অলরাউন্ডারের সামনে।
৮ ম্যাচে মাত্র ৬.১৭ ইকোনমি রেটে ১৪ উইকেট নিয়ে বোলার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন রশিদ খান। তার সেরা বোলিং ফিগার ১৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট। অবশ্য শুধু বোলার নয়, ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা থাকলেও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পছন্দের একাদশের অধিনায়কও তিনি। তার নেতৃত্ব চলতি আসরে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলগুলোকে হারিয়ে সেমিফাইনাল খেলেছে আফগানিস্তান।
রশিদের পরে বোলার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনও। বাংলাদেশিদের মধ্যে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ডটি এখন তার দখলে। ৭ ম্যাচে ৭.৭৬ ইকোনমিতে তিনি নিয়েছেন ১৪ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৩ রানের বিনিময়ে ২ আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
দুই স্পিনারের বাইরে পেস বোলার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন ফজলহক ফারুকী, জাসপ্রিত বুমরাহ ও এনরিখ নরকিয়া। দুর্দান্ত এক আসর কাটানো ফারুকী ৮ ম্যাচে ৬.৩১ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ৯ রানের বিনিময়ে ৫। এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।
অন্যদিকে কিপটে বোলিংয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন বুমরাহ। ভারতীয় পেসার ৭ ম্যাচে মাত্র ৪.১২ ইকোনমিতে নিয়েছে ১৩ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ৭ রানের বিনিময়ে ৩।
এদিকে বেশ খরুচে ছিলেন এনরিখ নরকিয়া। ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিলেও তার ইকোনমি রেটটা ১৩.৪৬! সেরা বোলিং ফিগার ৭ রানের বিনিময়ে ৪।
ক্রিকেট অস্ট্রেয়ার মতে বিশ্বকাপের সেরা একাদশ: ট্রাভিস হেড, রোহিত শর্মা, নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক), অ্যারন জোন্স, মার্কাস স্টইনিস, হার্দিক পান্ডিয়া, রশিদ খান (অধিনায়ক), রিশাদ হোসেন, ফজলহক ফারুকী, জাসপ্রিত বুমরাহ ও এনরিখ নরকিয়া।
সোনালী বার্তা/এমএইচ