রূপগঞ্জে ঘিরে রাখা সেই ভবন থেকে তিনটি বোমা উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি চারতলা ভবনে অভিযান চালিয়ে তিনটি তাজা বোমা পেয়েছে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত এই অভিযান চালান এটিইউ সদস্যরা। তাদের সহযোগিতা করেছে জেলা ও রূপগঞ্জ থানা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাড়িটির তিনতলার একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে তিনটি বোমা, চারটি চাপাতি ও দুটি উগ্রবাদী বই উদ্ধার করা হয়েছে। বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ওই কক্ষে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কক্ষটি কে বা কারা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো তা জানার চেষ্টা চলছে। এখনও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা সেখানে অবস্থান করছেন। এই ঘটনায় মামলা হবে।’
এর আগে, রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় সকাল ১০টা থেকে সৌদি আরব প্রবাসী জাকির মিয়ার মালিকানাধীন ওই বাড়িটি ঘিরে রাখেন এটিইউ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে দুপুরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান প্রসঙ্গে এটিইউর পুলিশ সুপার (অপারেশন) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত মাসের ৫ তারিখে নরসিংদিতে একটি রাইফেলসহ একজন সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছিল। তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিকে আমরা নেত্রকোনায় সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি আবিষ্কার করি। পরে জুন মাসের ৮-৯ তারিখে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে জানতে পারি, সেটি ছিল আনসারুল ইসলামের একটি প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে ব্যাপক তল্লাশি করে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া একজন নারী সদস্যকে গতরাতে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আজ রূপগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সকাল থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। পরে দুপুরে অভিযান চালিয়ে ওই কক্ষে তালা দেখতে পাই। যারা সেখানে অবস্থান করছিল তারা অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে থেকে পালিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই কক্ষে দুজন সদস্য সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করতো। তারা দুজনই নেত্রকোনার ওই দলের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের দুজনের মধ্যে একজন সেখানকার প্রশিক্ষক। সে নতুন জঙ্গিদের আইটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এ ছাড়া একজন নারী সদস্য আসতো। তবে প্রতিদিন আরও অনেক সদস্য আসা-যাওয়া করতো। তাদের একটি কক্ষে আইটি ও অপর কক্ষে এক্সপ্লোসিভ রিলেটেড ডিভাইস রয়েছে। এ ছাড়া তিনটি বোমা উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।’
ওই ভবনের আরেক ভাড়াটিয়া সুন্নত মিয়া বলেন, ‘তৃতীয় তলার ওই কক্ষে বেশ কয়েক মাস ধরে বসবাস করছেন দুই শিশুসন্তানসহ স্বামী-স্ত্রী। তবে গত কয়েকদিন ধরে তাদের দেখতে পাচ্ছি না। ওই দম্পতি জানিয়েছিল, তারা নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডে গার্মেন্টসে চাকরি করে। তবে তাদের নাম জানা নেই। তারা সেভাবে কারও সঙ্গে কথা বলতো না।’