আফগানিস্তানে হামলা করবে পাকিস্তান
মাত্র বছর কয়েক আগে আফগান মাটি থেকে পরাজয় মেনে নিয়েই টোপ্লাটাপ্লি গুটিয়েছে পরাশক্তি আমেরিকা। তার আগে একই ভাগ্য বরণ করেছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তারপর কাবুলের ক্ষমতা দখল করেছে ধর্মীয় কট্টরপন্থী একটি গোষ্ঠী। সেই সুযোগে মাথাচারা দিয়ে উঠে উগ্রপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এবার তাদের থামাতে আফগানিস্তানে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন মিত্র ও সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র পাকিস্তান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উগ্রপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে হামলা অব্যাহত রাখবে ইসলামাবাদ। এমন মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
সম্প্রতি সীমান্ত এলাকাগুলোতে আফগান মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা ও হামলা ঠেকাতে দেশজুড়ে আযম-ই-ইসতেহকাম নামে নতুন সামরিক অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, মূলত বেইজিংয়ের চাপেই নুতন এ সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসলামাবাদ। দেশটির চীন-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোরে কাজ করা চীনা কর্মী ও বিভিন্ন কারণে অবস্থান করা চীনা নাগরিকদের সুরক্ষা দিতেই এমন পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের ওপর চাপ দিয়েছে চীন। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পাকিস্তানের ভূখণ্ড, নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলায় জড়িত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে।
এর আগে চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তানের মাটিতে এমন একটি হামলার ঘটনা স্বীকার করেছে পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে কাবুলের ক্ষমতায় থাকা তালেবান প্রশাসন একে দেশটির সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হিসেবে মন্তব্য করেছে। বিবিসিকে দেয়া এক মন্তব্যে খাজা আসিফ জানান, এটা সঠিক যে পাকিস্তান বাহিনী আফগানিস্তানে তাদের অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের এ মন্ত্রী জানান, যদি পাকিস্তানে হামলা করা হয় ততে তার জবাব হামলার মাধ্যমেই দেয়া হবে। এমনকি হামলার ব্যপারে আগে থেকে তালেবান সরকারকে জানানো হয় না বলেও মন্তব্য করেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এ সময় এসব হামলার বৈধতা নিয়ে তোলা প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে খাজা আসিফ জানান, আগে থেকেই হামলার তথ্য জানানো হলে সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো প্রস্তুত হওয়ার সময় পায়। পাকিস্তান কেন তাদের সেই সুযোগ দেবে বলেও প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ অভিহিত করে নিজেদের মাটিতে পাক বাহিনীর এমন হামলার প্রতিক্রিয়া ভোগ করতে হবে বলে এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেয় তালেবান প্রশাসন।
২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে যে তালেবানদের একটি দল যারা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান নামে পরিচিত তারা আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে আসছে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ