মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৬ অপরাহ্ন

তাসকিনের আগে ঘুমকাতুরে ছিলেন যিনি

স্পোর্টস ডেস্ক / ১১৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪

রবার্ট এ হেইনলেইনের বিখ্যাত উক্তির ‘আর কিছুই না, পর্যাপ্ত ঘুমের মধ্যেই রয়েছে সুখের চাবিকাঠি।’ কবি জীবনানন্দ দাশ আরও এক ধাপ এগিয়ে তাঁর কবিতায় বলেছেন, ‌‘ঘুমাও; কারণ, ঘুমের মাঝে মৃত্যুর মতন শান্তি আছে।’

আমাদের ক্রিকেট অঙ্গনও আপাতত ঘুম-কাণ্ডে তোলপাড়। ঘুম নিয়ে এই বিপত্তির উৎপত্তি সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অ্যান্টিগায় ভারতের বিরুদ্ধে সুপার এইটের ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বাংলাদেশ দলে না থাকার নেপথ্যের কারণ খুঁজতে গিয়ে মূলত এই বিতর্কের জন্ম। ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় সেদিন তাসকিন দলের সঙ্গে মাঠে যেতে পারেননি বলে খবর প্রকাশ হয় সংবাদমাধ্যমে। আর এ জন্য নাকি তাঁকে ভারতের বিপক্ষে একাদশে রাখা হয়নি।

২০০৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক চট্টগ্রামের ছেলে আফতাবের। মারকুটে সাবেক এই ব্যাটসম্যানেরও ঘুমের বাতিক ছিল। যেখানে যেতেন সেখানেই নাকি ঘুমিয়ে পড়তেন।

২০০৫ সালে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বয়ং আফতাবই এসব তথ্য দিয়েছিলেন। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর চট্টগ্রামের বাসায় বসে কথা বলেছিলেন এ বিষয়ে। আফতাব সেই সিরিজে দারুণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। শেষ ম্যাচে ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন। সিরিজের ক্লান্তি দূর করতে একটু ‘শান্তিতে ঘুমাতে’ নগরীর আসকারদিঘির বাসায় ফিরেছিলেন। ২০০৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর তখনকার ক্রীড়াবিষয়ক সাপ্তাহিক সাপ্লিমেন্ট ‘স্টেডিয়াম’ পাতায় ছাপা হয়েছিল ‘ঘুমকাতুরে সেই ছেলেটি’ শীর্ষক আফতাবের ঘুমনামা।

ঘুমের কারণে কোনো ম্যাচ খেলতে না পারা বা দেরিতে মাঠে পৌঁছানোর ঘটনা ঘটেনি আফতাবের ক্ষেত্রে। শুধু সকালে সুখের ঘুম উপেক্ষা করে অনুশীলনে যেতে মন একেবারেই সায় দিত না তাঁর। এ জন্য টিম বাসে আফতাবের বেশির ভাগ সময় কাটতো ঘুমিয়ে। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবরটিও আফতাব আহমেদকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিয়েছিলেন সতীর্থরা। তখন (২০০৩ সাল) তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফর করছিলেন।

সেই সাক্ষাৎকারে গল্পটাও বলেছিলেন আফতাব, ‘আমরা পুরো দল বাসে করে যাচ্ছিলাম। আমি বাসের পেছনের সিটে গা এলিয়ে যথারীতি ঘুম। হঠাৎ আমার গায়ের ওপর একটা হাত পড়ল। চোখ মেলে দেখি রিচার্ড ম্যাকিন্স। তিনি তখন দিলেন সেই সুসংবাদ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে আমি সুযোগ পেয়েছি। প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি। পরে অন্যরাও একই কথা বললেন। কী যে আনন্দ।’

এই হলো ঘুমকাতুরে আফতাব আহমেদ। কার্ডিফে যাঁর উইনিং শটে ক্রিকেট পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ঐতিহাসিক জয় এসেছিল। ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ-কাণ্ডে (আইসিএল) ২০০৯ সালে নিষিদ্ধ হন আফতাব। এক বছর পর আবার জাতীয় দলে ফিরলেও ক্যারিয়ারটা আর দীর্ঘ হয়নি। পরে ক্রিকেট কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। ক্রিকেট শিখিয়ে এখন থিতু হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর