চারঘাট বড়াল নদী পুনঃখননে অনিয়ম

পানি প্রবাহে প্রতিবিঘ্নতা সৃষ্টি হওয়ায় অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে অনেক আগেই নাব্যতা হারিয়েছে চারঘাটের বড়াল। সেই নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বড়াল নদীর উৎস্যমুখ মোহনায় ও নদীগর্ভে মুখ পুনঃখনন কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাইলট প্রকল্প । তবে সেই পাইলট প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, পানি উন্নয়নের তত্বাবধানে পদ্মা নদীর শাখানদী চারঘাট বড়ালে পানির সুষ্ঠ প্রবাহ বজায় রাখতে নদী মোহনায় প্রায় ৪৫০ মিটার পুনঃখনন কাজ শুরু হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫২ লাখ টাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিত খনন নদীর উৎস্যমুখে সঠিক পানি প্রবাহে কোন কাজে আসবে না। গচ্চা যাবে প্রকল্প থেকে দেয়া সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমিন অ্যান্ড কোং খননযন্ত্র ভেকু দিয়ে কয়েকদিন নদীর মহনায় ও ব্রীজ সংলগ্ন জায়গায় মাটি কেটে নদীর দুপাশেই জমা করে রেখেছে। এতে বৃষ্টি ও বর্ষা মৌসুমের পানিতে মাটি ধুয়ে আবার নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বড়াল নদীর উৎস্যমুখের মূল মোহনায় না কেটে খানিকটা দক্ষিণ দিকে সরে গিয়ে ১০-১২ মিটার প্রস্থ সরু খাল এর মতো খনন করা হয়েছে। অথচ উৎস্যমুখে বড়াল আয়তন প্রায় ৪শত ফুট প্রশস্ত ।
বড়াল নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে চিরতরে নদীটি বিলীনের মুখে ফেলছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি দীর্ঘদিন ধরে সঠিকভাবে খনন না হওয়ায় নদীটি ভরাট হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। বর্তামানে খনন কাজ শুরু করা হলেও তা সরুভাবে খনন করে একদম খালে পরিণত করা হচ্ছে। নদীটি সঠিকভাবে খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর মুঠোফোনে জানান, বড়াল নদীর মুখ পুনঃখনন পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪৫০ মিটার খনন কাজ করার জন্য এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নাব্যতা ফিরতে ইতিমধ্যে বড়াল নদীর মুখে খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে । তবে উৎস্যমুখে খননের ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি সরবরাহ বাড়বে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নাটোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমরান হোসেন বলেন, এ প্রকল্প বিষয়ে আমরা অবহিত নয় তবে ইতিমধ্যে বড়াল পুনঃখননের জন্য বড়াল নদী পুনঃজীবিতকরন প্রকল্প নামে প্রকটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে যা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বড়াল নদীর প্রায় ১০২ কিমি খনন করা হবে।
চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদা খানম বলেন, বড়াল নদী সংস্কার সংক্রান্ত তথ্য আমার কাছে নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড নাটোর বা রাজশাহী কেউ চারঘাট উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে নাই। তবে জেলা প্রশাসককে এবিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ