চাঁদা না পেয়ে কৌশলে চন্দ্রিমা থানার ওসিকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছোটনের বিরুদ্ধে

এটিএন বাংলার সাংবাদিক হিসেবে পরিচিতি তার। আলোচিত-সমালোচিত সাংবাদিকদের মধ্যে তিনি একজন। বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে এবং থানার ওসিদের কাছে রয়েছে ব্যপক পরিচিতি। কারন তার আয়ের উৎসর মধ্যে অন্যত্তম উৎস হলো তদবির। অর্থাৎ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধে থানায় গ্রেফতার হওয়া আসামীদের স্বজনরা কেউ ছোটনের কাছে গেলে তাদের সাথে অর্থের বিনিময়ে চুক্তি করেন তিনি।
থানায় গিয়ে ওসি-স- উদ্ধতন কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে বোঝান যে, আসামী একজন নিরিহ গরিব, অসহায়, তার কাছের মানুষ ইত্যাদি। পরিশেষে কাঙ্খিত ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে পকেট ভরেন তিনি। চা- মিষ্টির দাওয়াত দিয়ে চলে যান। পকেট ভরে ছোটনের। সফল অভিযান ব্যর্থ হয় পুলিশের।
এমনই বক্তব্য বিভিন্ন পুলিশ অফিসার ও সাংবাদিকদের মুখে শোনা যায়। তাছাড়া এই কর্মকান্ড নতুন কিছু নয় দীর্ঘ কয়েক বছরের। রাজশাহী নগরীর শিরোইল রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারির ঘটনা নতুন কিছু না। তার দ্বার রেলওয়ে-সহ একাধীক সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারা ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন।
সে বিষিয়েও একাধিক কর্তাব্যক্তিদের অভিযোগ রয়েছে। বিগত দিনে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ- মোকারম, জিয়াউর রহমান-সহ আরও অনেককে তিনি ফাঁসিয়েছিলেন, ওসি মোয়াজ্জেম, তিনি তো তার নামে জিডিও করেছিলেন।
এছাড়াও আরও অনেকে তার দ্বারা নিউজে লাঞ্ছিত হয়েছেন। যেতে হয়েছে মডেল থানা ছেড়ে। নারী কেলেংকারীতে ছোটনের জুড়ি মেলা ভার। এক সময় তার রেল স্টেশনে যাওয়াও নিষেধ ছিলো, একমাত্র কারন নারী কেলেংকারী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক সাংবাদিকরা জানায়, ছোটন ব্যতিক্রম মানুষ এবং কৌশলী। বিভিন্ন থানায় গিয়ে ওসিদের অফিসে বসেন।
কিছু জানেন না, এমন ভাব নিয়ে পুলিশের আলাপ চারিতা শোনেন, তার সাথে যাদের রাখেন তাদের ব্যবহার করেন কল রেকর্ড করা এবং হিডেন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করা। কোন ভাবে যদি একটা ভিডিও পুজি করতে পারে তাহলেই সেই পুলিশ কর্মকর্তা যতদিন ওই থানায় থাকেন তাকে মোটা অংকের টাকা দিতে হয় এই রকম অভিযোগের শেষে নেই।
এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ গত ৫জুলাই তারই তদবিরের একটি ঘটনায় আরএমপি চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুব আলমকে বলির পাঠা বানান ছোটন। কথায় বলে উপকারের কোন বাড়ি, ধরে আন পাছায় লাথি মারি। এমনি ঘটনা ঘটেছে ওসি মাহবুব আলমের সাথে।
উল্লেখ্য, বাগমারায় জঙ্গিদের মদদ দান, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগ, নাদিম মোস্তফা, দুলু ও সাংবাদিক ছোটন-সহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যাহা দৈনিক মুক্ত চেততা ও দৈনিক শানসাইন পত্রিকা-সহ আরও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো।
“গ্রেফতার হয়নি শীর্ষ সন্ত্রাসীরা সেনা অভিযানে সাময়িক স্বস্তি” শিরোনামে দৈনিক সংবাদ ও প্রথম আলো পত্রিকায় যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়, ওই সংবাদের একটি কলামে উল্লেখ করা হয় বগুড়ার মেরপুরে ৪৭ লাখ টাকা ছিনতাই মামলার অন্যতম আসামী সাংবাদিক সুজা উদ্দিন ছোটন।
এছাড়াও বেলী খাতুন নামের এক নারীকে পুলিশ পরিচয়ে শ্লীলতা হানী ও পায়জামা ছিড়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সাংবাদিক সুজা উদ্দিন ছোটন ও তার সহযোগীদের নামে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছিলো।
রাজশাহীর ভুক্তভোগী অসংখ্য মানুষ চিহিৃত চাঁদাবাজ, ব্ল্যাকমেইল, কথিত সাংবাদিক সুজাউদ্দিন ছোটন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য র্যাবের কাছে আবেদন করেছিলেন। ওই অভিযোগে সুজাউদ্দিন ছোটনের বিরুদ্ধে তদবিরের নামে দুই পক্ষের কাছে ৭০ হাজার টাকা গ্রহণ করা-সহ অভিযোগে আরও অনেক অপকর্মের কথা উল্লেখ করা হয়। ছোটন সাংবাদিক তৈরির নাম করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া বেশ কিছু মেয়ের সর্বনাশ করে যাচ্ছে। এছাড়াও ওই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
“চাঁদাবাজ লাল ভেসপা ব্যবহারকারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন” শিরোনামে দৈনিক ছাড়পত্র পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে সাংবাদিক ছোটেনের বিভিন্ন অপকর্মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ২১’শে টিলিভিশনের রাজশাহী প্রতিনিধি বদরুল হাসান লিটন ও এনজিও কর্মী আয়শা আক্তার লিজা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে ছোটনের নানা অপকর্ম তুলে ধরে অভিযোগ করেছিলেন।
সম্প্রতীক সময়ে এনজিও কর্মী আয়শা আক্তার লিজার সাথে অর্থিক বনিবনা না হওয়ায়, তাকে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ রয়েছে ছোটনের বিরুদ্ধে। পরে মামলা থেকে আয়শা আক্তার লিজাকে অব্যাহতি প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত।
সর্বশেষ বির্তর্কীত সাংবাদিক ছোটনের সরকার বিরোধী একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে সরকার ও সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিরুপ মন্তব্য করতে দেখা যায় ছোটনকে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ