বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে সাপের কামড়ে সুস্থতার হার ৭০ শতাংশ

মোঃ রমজান আলী, রাজশাহী / ১৪৪ Time View
Update : শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৪১৬ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হন। বিষধর সাপের দংশনে আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন ৭৩ জন, তাদের মধ্যে ১৮ জনকে দংশন করেছিল চন্দ্রবোড়া সাপ। আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান ১১ জন। চন্দ্রবোড়ার দংশনে মারা যান পাঁচজন। সাপের কামড়ে সুস্থতার হারও ৭০ শতাংশ।

বুধবার রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে রাসেলস ভাইপার নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের অসংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন মূল বক্তব্য তুলে ধরেন।

জানানো হয়, বাংলাদেশে ৪ লাখের অধিক মানুষ প্রতি বছর সাপের কামড়ের শিকার হন। এতে মারা যান প্রায় সাড়ে সাত হাজার। সাম্প্রতিক সময়ে রাসেলস ভাইপার নিয়ে সারাদেশে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে। এতে করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে সর্পদংশন নীতিগতভাবে একটি স্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।

তবে এখনো পদ্মার তীরসংলগ্ন এলাকায় রাতভর রাসেলস ভাইপার সাপের ফোঁস ফোঁস শব্দ শোনা যায়। সবার মধ্যেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাপ আতঙ্কে জেলায় ক্ষেতের ফসল তুলতে ভয়ে মাঠে নামছেন না চাষিরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৩১ মে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মেরামতপুরে মাঠে চোয়ালে রাসেলস ভাইপার সাপের ছোবল খান হেফজুল আলী নামে এক কৃষক। সাপটিকে মেরে সঙ্গে নিয়ে দেড় ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তিনদিন আইসিইউতে থেকে এখন অনেকটাই সুস্থ হেফজুল। তবে শারীরিক দুর্বলতার পাশাপাশি এখনো চোয়ালে ব্যথা আছে তার।

গত ৭ মে চারঘাটে শাকিনুর রহমান সাব্বির নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মারা যান বিষধর ওই সাপের ছোবলে। একসময় বিলুপ্তপ্রায় চন্দ্রবোড়া জাতের ওই সাপটি রাজশাহীর পদ্মা নদীতে পাওয়া গেলেও এখন আশপাশের জেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে চরম আতঙ্কিত চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সাপের ছেবলে ৩৬২ জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরমধ্যে ৪৩ জন মারা যান। এরমধ্যে রাসেল ভাইপার সাপের ছোবলে মারা গেছেন ১৮ জন। ২০২৪ সালে এ পর্যন্ত সাপের কামড় খেয়ে ৩১৫ জন রোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন। আর শুধু রাসেলস ভাইপারের ছোবলে মারা গেছেন পাঁচজন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সাপ গবেষক ও প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস রোমান বলেন, প্রাণঘাতীর তালিকায় রাসেলস ভাইপার সাপের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। তাই এই সাপ দেখা মাত্র না মেরে বন বিভাগ বা তাদের খবর দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইএমও ইনচার্জ শঙ্কর কুমার বিশ্বাস বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিভেনাম রাখা হয়েছে। রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা রোগীদের ঝাড়ফুঁক বা ওঝার কাছে না নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর