শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন

কোটা সংস্কার দাবিতে ঢাবিতে দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ, বিকেলে ছাত্রলীগের অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৮৫ Time View
Update : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার দুপুর ১২টায় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।

আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে গতকাল রোববার মধ্যরাতে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে তাঁরা আবার বিক্ষোভ ডেকেছেন।

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করার প্রতিবাদে আজ বেলা তিনটায় অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ।

ঘোষণা অনুযায়ী, দুটি কর্মসূচিই হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।

চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল রাত ১০টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী নানা স্লোগান দেন। সেখানে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। জমায়েতে শিক্ষার্থীরা ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’সহ নানা স্লোগান দেন।

সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে গতকাল বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে?’

কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা বক্তব্য আজ দুপুর ১২টার মধ্যে প্রত্যাহার না করলে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন।

গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে ঘিরে ছাত্রলীগের একটি অংশ মধুর ক্যানটিনে অবস্থান নিয়েছিল। ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেলে করে লাঠিসোঁটা নিয়ে মধ্যরাত থেকে জড়ো হন শাহবাগ এলাকায়। ছাত্রলীগ ছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরাও সেখানে ছিলেন। ক্যাম্পাসের আশপাশে তাঁদের দেখা গেলেও তাঁরা কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াননি। কিন্তু সরকার-সমর্থক সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের এমন অবস্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। রাতে শাহবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের একটি অংশও বিক্ষোভ করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর টিএসসি এলাকায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খানসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। পরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। মিছিলে ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়। রাত তিনটার পর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগ সমাবেশ করে।

সাদ্দাম আরও বলেন, আজকে যারা নিজেরা বলছে ‘আমি রাজাকার’, তাদের জন্য ছাত্রলীগ রাজাকার কোটা চালু করল। যারা রাজাকার কোটার আওতাধীন, তাদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিয়েই ছাত্রলীগ ক্ষান্ত হবে। যেখানেই রাজাকারদের দেখা যাবে, সেখানেই প্রতিবাদ গড়ে তুলে তাদের আপন ঠিকানায় পাঠিয়ে দিতে হবে।

লাখো শহীদের রক্তকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করার প্রতিবাদে আজ বেলা তিনটায় রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন সাদ্দাম।

অন্যদিকে ভোর চারটায় এক ভিডিও বার্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, তাঁরা স্পষ্টভাবে বলতে চান, শিক্ষার্থীদের জন্য যে অপমানজনক মন্তব্য করা হয়েছে, তা অবশ্যই সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বক্তব্য প্রত্যাহার না হলে সারা দেশের সব শিক্ষার্থীকে সোমবার দুপুর ১২টায় দেশের সব স্থানে বিক্ষোভ মিছিল পালনের আহ্বান জানান তিনি। আর দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ হবে বলে জানান তিনি।সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার দুপুর ১২টায় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।

 

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর